পুলিশের হাতে আটকরা

বগুড়ায় অ্যালকোহল পানে বুধবার দুপুর পর্যন্ত আরও সাতজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ নিয়ে গত তিনদিনে অ্যালকোহল পানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়াল। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে হোমিও চিকিৎসকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

নতুন যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন- বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাট ফুলবাড়ি বালুচড়া গ্রামের লাজু (২৭) ও ইউসুফ (৪০), বগুড়া সদরের কৈপাড়া এলাকার রামচন্দ্র (৬১), শহরের ফুলবাড়ি দক্ষিণ পাড়ার আব্দুর রহিম (৩৫), শহরের আলমগীর হোসেন (৩৫), কাহালুর উলট্ট গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক আবুল কালাম (৫০) ও শাজাহানপুরের সার্ভেয়ার আহাদ আলী (৩৮)।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার দুপুর পর্যন্ত আরও চারজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ।

এদিকে, এ ঘটনায় অসুস্থ রঞ্জুর ভাই মনোয়ার হোসেন রিপন মামলা করেছেন। মামলার পর রাতে অভিযান চালিয়ে সদর থানা পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। 

গ্রেপ্তাররা হলেন - বগুড়া সদর উপজেলার ছোট কুমিরা এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে হোমিও চিকিৎসক আব্দুল খালেক (৬৫), সদরের ঠেঙ্গামারা এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ হোসেন, সদরের আকাশতারা এলাকার আবু বক্করের ছেলে আবু জুয়েল (৩৫) ও শহরের নাটাইপাড়া এলাকার মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সাহিদুল আলম (৫৫)।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, মঙ্গলবার রাতে শহরের সাতমাথায় শাজাহানপুরের বেশ কয়েকজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক জানান, মেহেদী নিয়মিত অ্যালকোহল পান করতেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।

রাতে শাজাহানপুরে মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ভাই স্কুলশিক্ষক আফসার আলী জানান, তার ভাই নিয়মিত দেশীয় মদ পান করতেন।

শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুলাহ আল মামুন জানান, মেহেদী হাসান ও আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর হয়েছে। তবে তাদের পরিবার দাবি করেছে, অ্যালকোহল পানে মৃত্যু হয়নি। ময়নাতদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

এর আগে বগুড়ায় সোমবার ও মঙ্গলবার অ্যালকোহল পানে মৃতরা হলেন- শহরের কাটনারপাড়া হটুমিয়া লেন এলাকার চা বিক্রেতা সাজু মিয়া (৫০), বাবুর্চি মোজাহার (৬৫), ফুলবাড়ি এলাকার রিকশাচালক আব্দুল জলিল (৫৬), পুরান বগুড়া এলাকার সুমন রবিদাস (৩২), ফুলবাড়ি এলাকার পলাশ (৩৫), শহরের পুরান বগুড়া এলাকার প্রেমনাথ রবিদাস (৭০), তার ভাই রামনাথ রবিদাস (৬০), একই এলাকার ট্রাকচালক খিতিশ চন্দ্র ভেলু (৬৫), পুরান বগুড়া জেলাদার পাড়ার রমজান আলী (৪০) ও সদরের ফাপোড় এলাকার মেকানিক জুলফিকার আলী (৫২), বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার দুরুলিয়া মণ্ডলপাড়ার সিএনজির মেকার মেহেদী হাসান (২৮) ও রহিমাবাদ উত্তরপাড়ার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আব্দুর রাজ্জাক (৪০)।

উল্লেখ্য, বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সদর থানা চত্বরে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে বগুড়ায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা স্টোক করে মারা গেছেন। এ ঘটনায় একটি মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাখাওয়াত হোসেন জনি/এসপি