প্রথমে সহজ সরল ও বয়স্ক ব্যক্তিদের টার্গেট করে পরিচয় আদান-প্রদান। তারপর সখ্যতা গড়ে তুলে প্রেম বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক। এরপর বাসায় আমন্ত্রণ। বন্ধুত্ব বা প্রেম ভেবে যারাই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বাসায় গেছেন, তারাই হয়েছেন প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার। খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এখানেই শেষ নয়। নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এবং জিম্মি করে মুক্তিপণও আদায় করত চক্রটি।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) একটি অভিযোগের ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের দক্ষিণ হাসপাতালপাড়া থেকে ওই চক্রের এক নারী সদস্যসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুলচারা গ্রামের আমজেদের মেয়ে রেখা খাতুন (৩০) ও পৌর এলাকার সুরত আলীর ছেলে আলীহিম (২১)।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চক্রটি প্রথমে রেখা খাতুনকে দিয়ে পুরুষদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতো। চক্রের বাকি সদস্যরা পুরুষ। রেখা সহজ সরল এবং অপেক্ষাকৃত বয়স্ক লোকদের সঙ্গে প্রেম করতেন। এরপর তাদের বাসায় নিয়ে আসতেন। কেউ বাসায় আসলেই চক্রের পুরুষ সদস্যরা তাকে মারধর করে মোবাইল ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতেন। এরপর নগ্ন ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করতেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দক্ষিণপাড়ার একটি ভাড়া বাড়িতে জিম্মি করে চক্রটি। তারপর টাকা আদায়ে তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে ওই বৃদ্ধ তার পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা তাদের দেন। পরে সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ দক্ষিণ হাসপাতালপাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। পরে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ ওই চক্রের চারজন সদস্যের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই চক্রটি নারী সদস্যকে দিয়ে সহজ সরল ও বয়স্কদের টার্গেট করত। পরে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে নগদ টাকা দাবি করত। টাকা দিতে অস্বীকার করলে চলতো নির্যাতন। আবার জিম্মি করে মুক্তিপণও আদায় করত তারা। এ ঘটনায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। নারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আফজালুল হক/আরএআর