রংপুরে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও জনসচেতনতা বাড়াতে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত নতুন করে জারি করা বিধিনিষেধ প্রতিপালনে শুরু হয়েছে তৎপরতা। এরই অংশ হিসেবে শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরীর সর্ববৃহৎ আড়ত সিটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মলিহা খানম। তাকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তা এবং রোভার স্কাউট সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

অভিযানে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বাজারের ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা সাধারণের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করেন। এ সময় আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

রংপুর সিটি বাজার ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জনসাধারণের মাঝে মাস্ক বিতরণ করাসহ করোনাভাইরাস রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।  

এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মলিহা খানম।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা আগের চেয়ে বেশি তৎপর এবং মাঠে রয়েছি। করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এখন সব বয়সী মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রীপরিষদের দেওয়া নির্দেশনার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে আমরা চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, জনসমাগম যেখানে বেশি হয়, সেখানে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। জনস্বাস্থ্য রক্ষাসহ প্রতিটি মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতে আমাদের এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং আরও জোরদার করা হবে। জরিমানা করব, তবে আগে সচেতনতার বার্তা দিচ্ছি। এরপরও যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়, তাহলে আমাদের কঠোর অবস্থানে যেতে হবে।

নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্নস্থানে চালু থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার প্রসঙ্গে মলিহা খানম বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবদিকে খোঁজ রাখছি। যদি কোথাও এমনটা হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই নির্দেশনা অমান্য করার কারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় সরকারের নির্দেশনা মানার সঙ্গে আমাদের সবাইকে সচেতনতা অবলম্বন করে চলাফেরা করতে হবে।  

এদিকে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সরকারের মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের নতুন করে জারি করা বিধিনিষেধ কাগজে-কলমে রয়েছে। বাস্তবে এর ছিটেফোঁটাও মানা হচ্ছে না। অনেকটা স্বাভাবিক ভাবেই চলছে মানুষের জীবনযাত্রা। হাট-বাজার, মার্কেটসহ জনসমাগমপূর্ণ এলাকাগুলোর কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খেতে চাইলে ভোক্তাকে অবশ্যই করোনা টিকা গ্রহণের সনদ দেখানোর নির্দেশনা থাকলেও রংপুরে সেটা মানছে না। ফলে সরকারের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি এক ধরনের অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে রংপুরকে ইয়েলো জোন (মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ) ঘোষণা করা হলেও এর কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই