কুড়িগ্রামে ধরলার তীরজুড়ে শোভা পাচ্ছে সূর্যমুখী ফুল। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। কৃষক মো. আবু বক্করও (৬৭) এর ব্যতিক্রম নয়। সফলতার আশায় বুক বেঁধে ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবরাম এলাকায় চাষ করেছেন সূর্যমুখী ফুলের।

সূর্যমুখী চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সূর্যমুখীর বীজ বপন করার পর পরিপক্ক হতে সাড়ে ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগে। জমিতে সারিবদ্ধ করে দুই ফুট দূরত্বে লাগাতে হয়। ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমিতে ৭- ৮ মণ বীজ হয়। প্রতি মণ বীজ তিন থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বাজারে বিক্রি হয়। এতে বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ৩-৪ হাজার টাকা।

সূর্যমুখী চাষে বেশি শ্রমিক প্রয়োজন হয় না, রোগবালাইও কম। তাছাড়া সূর্যমুখীর তেল স্বাস্থ্যসম্মত। তবে অন্যান্য তেলের চেয়ে দাম একটু বেশি। বেশি সার, পানি ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না বলে জানান কৃষকরা।

মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে সূর্যমুখী

সূর্যমুখী চাষি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গত বছর আমি ২১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হয়েছি। তাই এবার আবার ৫০ বিঘা জমিতে চাষ করছি। আশা করছি, গতবারের চেয়ে এবার বেশি লাভ করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য আবাদের চেয়ে সূর্যমুখী অনেক লাভজনক। সূর্যমুখীর তেল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়াও সূর্যমুখী থেকে অনেক উন্নতমানের তেল হয়।

আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য ফসল নিয়ে ব্যস্ত। তাই সূর্যমুখী চাষের দিকে নজর দিচ্ছে না। এ বছর কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার মাধ্যমে বীজ দেওয়ার কারণে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

ফোটার অপেক্ষায় সূর্যমুখী ফুল

জানা গেছে, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনার মাধ্যমে সূর্যমুখীর বীজ দিয়েছেন সরকার। হাইব্রিড জাতের এ বীজ বাজারে ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলায় এ বছর ২২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী তেল পুষ্টিকর। সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখী তেলের দাম অনেক বেশি। প্রতিকেজি সূর্যমুখী তেল ৪শ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকারিভাবে প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষককে বীজ দিয়েছে সরকার।

জুয়েল রানা/এসপি