বিএল কলেজের শিক্ষার্থী রুবেল হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন
খুলনার বিএল কলেজের ছাত্র মো. রুবেলকে (২২) হত্যার দায়ে আল আমিন বিশ্বাস নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- খুলনার খানজাহান আলী থানার জাব্দিপুর এলাকার মোমিন বিশ্বাসের ছেলে আল আমিন বিশ্বাস।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি পলাতক ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আদালত ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, তেলীগাতী মধ্যপাড়া এলাকার চান মোল্লার ছেলে ভিকটিম মো. রুবেল। তিনি বিএল কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বড় ভাই বারেকের স্ত্রীর ছোট বোন সম্পা ফুলবাড়িগেট টিচার্স ট্রেনিং স্কুলে পড়াশোনা করত। সম্পার স্কুলে যাওয়া-আসার পথে আসামি আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি জানার জন্য রুবেল আব্দুল্লার কাছে যায়। এ সময় উভয়ের মধ্যে বিতণ্ডাসহ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আব্দুল্লা। পরিকল্পনার তিনমাসের মধ্যে রুবেলকে খুন করা হয়।
২০১৪ সালের ২১ জুন বিকেলে প্রতিবেশী রাজীবকে সঙ্গে নিয়ে ভিকটিম ফুলবাড়িগেট আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যায়। রাত সোয়া ৮টার দিকে রুবেল কুয়েটের নবম ব্যাচের সমাপনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যায়। সেখানে আসামি আব্দুল্লা রুবেলকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া দেয়। কিছু বুঝতে না পেরে রুবেল কুয়েটের অডিটোরিয়ামে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং মেজভাই বারেককে ফোন দেন। আব্দুল্লাহ ও তার সহযোগীরা তাকে ঘিরে রেখে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ ধারল ছুরি বের করে রুবেলের পেটে ঢুকিয়ে দেয় ও অপর আসামি পলাশ ছুরি দিয়ে বাম হাতে আঘাত করে। এলাকাবাসী ও বারেক উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরের দিন নিহতের পিতা আবু বক্কর সিদ্দিক ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১০ জনের বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় মামলা করেন।
এ মামলার অজ্ঞাতনামা আসামির মধ্যে আল আমিন ছিল। পুলিশের কাছে আটক হওয়ার পর সে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ জানিয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তার মৌসুমীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই পলাশ গোলদার ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারাধীন সময়ে ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। আজ এই মামলায় আল আমিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মোহাম্মদ মিলন/আরআই