ভোট দেওয়ার পর ইভিএমের ভয় কেটে গেছে
ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ময়মনসিংহের দুই উপজেলা ভালুকা ও ফুলপুর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো চলছে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট দেওয়ার আগে ভোটারদের মাঝে কিছুটা ভয় কাজ করলেও সহজেই ভোট দিতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন তারা। তবে প্রথমবার এ পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়ায় ভোটগ্রহণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল হোসেন। ভোট দিতে গিয়ে বুঝতে পারছিলেন না ইভিএমের সিস্টেম। এর আগে এ পদ্ধতিতে ভোট দেননি তিনি। পোলিং অফিসারদের কয়েক দফা জিজ্ঞাস করে নিজের ভোট সম্পন্ন করেন। তিনি বলেন, প্রথমে ভোট দিতে ভয় পাচ্ছিলাম। তবে ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে। আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার পর নিজের ছবিসহ সব তথ্যই দেখতে পেরেছি। আসলে বুঝলে এটা খুবই সহজ।
বিজ্ঞাপন
একই এলাকার ষাটোর্ধ্ব আছমা বেগম বলেন, জীবনে অনেকবার দিলেও এবার ভোট দিতে এসে ভয় লাগছে। বাটনগুলো বুঝতে পারছিলাম না। পরে নারী আনসার সদস্যের সহায়তায় ঝামেলা ছাড়াই ভোটটি দিতে পেরেছি।
ওয়াছেদিয়া ফুরকানিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, বার বার বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের। এ কারণে ভোট গ্রহণের গতি কিছুটা কম।
বিজ্ঞাপন
ভালুকায় ১১ ও ফুলপুরে ১০টি ইউপিতে ইভিএম পদ্ধতিতে হচ্ছে ভোটগ্রহণ। এতে দুই উপজেলার ৫ লাখ ২৬ হাজার ৭০৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। ২১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১১২ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৮১০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ২৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি মাঠে সার্বক্ষণিক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।
ভালুকা উপজেলার ১১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৬০ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩৯৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করতে ইভিএমে ১২২টি কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন। মোট ভোটার ২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪২ জন।
অপরদিকে ফুলপুর উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬২ জন। এখানে ১০ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৫২ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪১৫ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করতে ইভিএমে ১০৫টি কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন এ অঞ্চলের ভোটাররা।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেওয়ান মো. সারওয়ার বলেন, বিগত নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও সব প্রস্তুতি রয়েছে। আশাকরি শেষ পর্যন্ত সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি এবং আনসার সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. এনামূল হক বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে কেউ যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য জেলা প্রশাসনের বিশেষ টিম মাঠে কাজ করছে। দুই উপজেলার ২১টি ইউনিয়নকে সমান গুরুত্ব দিয়েই প্রশাসন তৎপরতা চালাচ্ছে।
উবায়দুল হক/আরআই