বেশ কয়েকবার আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ইভিএমে আঈুলের ছাপ না নেওয়ায় ভোট দিতে পারেননি আলেকজান। তাই মন খারাপ করে চলে যাচ্ছেন তিনি। ভোট না দিতে পেরে যাওয়ার সময় আক্ষেপ করে তিনি বলেন, বয়স হয়েছে, আর ভোট দিতে পারব কি না জানি না। এটাই হয়ত শেষ ভোট। কিন্তু দিতে পারলাম না।
 
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ডুবিসায়বর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এমনটাই দেখা গেছে। তাদের মতো অনেককেই ভোট না দিতে পেরে চলে যেতে দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলোতে ভোটার সংখ্যা বেশি। ইভিএমএ কিছুটা সময় লাগছে। অনেকের বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা বুজিয়ে দিচ্ছেন, কীভাবে ভোট দিতে হবে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। হাতের আঙ্গুলের ছাপ না নেওয়ায় অনেকে ভোট দিতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।

নব্বই বছর বয়সী আলেকজান বলেন, সকাল ৯টায় একবার এসেছি। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও ভোট দিতে পারিনি। পরে বাসায় গিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে এসেছি। এ ছাড়া হাতের আঙ্গুল পাকার সঙ্গে ঘষে এসেছি। তারপরও কাজ হলো না। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলাম না। 

ভোট দিতে না পারা ষাটোর্ধ্ব আরেক নারী সানাবানু বলেন, কয়েকবার চেষ্টা করেছি কিন্তু হয়নি। আঙুলের ছাপ আসে না। তাই ভোট দিতে পারলাম না।

ডুবিসায়বর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো. দাদন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেকের ডায়াবেডিস বা অসুস্থতার জন্য আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না। ট্রেনিং এটা বলে দেওয়া হয়েছে যে এমনটা হবে। তাদের একটি লিস্ট করে রাখতে হবে। যখন ভিড় কমবে তখন আবার চেষ্টা করব। তখনও যদি না হয়, তাহলে তাদের মধ্যে এক পার্সেন্ট ভোটারের ভোট সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের আঙ্গুলের ছাপে নিতে হবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনজুর হোসেন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন নিয়মিত ভোটারের অনেক চাপ। আমাদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে ভিড় কমলে আবার চেষ্টা করানোর জন্য।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরে ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়ন ও জাজিরা উপজেলার জাজিরা ইউনিয়নে, সেনেরচর, বড়কান্দি ও নওডোবা ইউনিয়ন। ৫টি ইউনিয়নে ৩৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ১৮২ জন সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬১ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া ২টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরআই