অস্তিত্বহীন মামলার ভুয়া পরোয়ানায় ১১ দিন কারাভোগের পর অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি মিলেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার অটোরিকশাচালক বুলবুল ইসলাম বুলুর (৪০)। আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে ময়মনসিংহ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পরিবারের কাছে ফেরেন তিনি।

গত ২০ জানুয়ারি বরগুনা সদরর থানায় ২০১৮ সালের একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল বুলবুলকে। ওই মামলায় তাকে কারাগারে নেওয়া হলেও মামলাটির কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি বরগুনা জেলায়।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বুলবুলের চাচাতো ভাই উজ্জল মিয়া বুলবুলের মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেন। পরে মামলার নথি পর্যালোচনা করে এ মামলার কোনো অস্তিত্ব না থাকায় বুলুকে অব্যাহতি দেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাসানুল ইসলাম। সেই আদেশপত্রটি সোমবার সকালে ময়মনসিংহ কারাগারে পৌঁছালে মুক্তি পান বিনাদোষে কারাভোগ করা এ অটোরিকশা চালক

এদিকে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের জামতলী গ্রামের নিজ বাড়িতে পৌঁছালে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বুলবুল। তাকে জড়িয়ে ধরে আনন্দের অশ্রু ঝরান স্বজনরাও।

বুলবুল ইসলাম বলেন, সারা দিন অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় হয়, সেই আয় দিয়েই পুরো সংসার চলে। এ অবস্থায় বিনাদোষে ১১ দিন কারাগারে থাকতে হলো। পরিবারের সবাই খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছে। যাদের কারণে এমন হলো, তাদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়, এটাই আমার দাবি।

বুলবুলের মেয়ে সুফিয়া খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমরা যে কী পরিমাণ কষ্টে এই ১১টা দিন কাটাইছি, তা আমরাই জানি। আমার বাপেরে যারা বিনাদোষ এত দিন জেল খাটাইল, তাগর বিচার চাই, আমরা আর কিচ্ছুই চাই না।

ভুয়া পরোয়ানায় ১১ দিন কারাবাস শেষে বাড়ি ফিরলেও এখনো অজানা ভয় তাড়া করছে স্বজনদের মাঝে। এমন ঘটনার পেছনে যাদের হাত আছে, শিগগিরই তাদের খুঁজে বের করার দাবি এলাকাবাসীর।

স্বজন ও এলাকাবাসীর প্রশ্ন, বিনাদোষে ১১ দিন কারাভোগের দায় নেবে কে, কে দেবে তার ক্ষতিপূরণ?

এর আগে রোববার (৩০ জানুয়ারি) সকালে ‘অস্তিত্বহীন মামলায় ১১ দিন ধরে কারাগারে চালক বুলবুল' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে।

উবায়দুল হক/এনএ