অস্ত্রোপচারের পর ভুল রক্ত প্রদান, মা ও নবজাতকের মৃত্যু
সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের আগে ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘এবি’ পজিটিভ রক্ত ব্যবহার করায় মাগুরায় 'নিউ আল বারাকা ক্লিনিক' নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এক প্রসূতি মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত প্রসূতি রাশিদা বেগম (২৪) মাগুরা সদর উপজেলার খর্দ গ্রামের রমজান শেখের স্ত্রী বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার বিষয়ে রাশিদার শ্বশুর মাখন অভিযোগ করে বলেন, আমার পুত্রবধূ রাশিদা বেগমকে (২৪) সন্তান প্রসবের জন্য গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে শহরের হাসপাতাল পাড়া এলাকায় নিউ আল বারাকা প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরদিন শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দিলারা আকবর লাবণী ওই ক্লিনিকে রাশিদা বেগমের অস্ত্রোপ্রচার করেন। এ সময় একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন রাশিদা।
কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগে রক্তের প্রয়োজন হলে রাশিদার শরীরে ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে ক্লিনিকের প্যাথলজি থেকে ‘এবি’ পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয়। এতে জন্মের পরপরই অসুস্থ হয়ে মারা যায় ওই নবজাতক।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে রক্তের ভুল ব্যবহারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন মা রাশিদা। উপায়ান্তর না দেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতি রাশিদা বেগমকে দ্রুত ঢাকার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাশিদার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে চিকিৎসক দিলারা আকবর লাবণী বলেন, রোগীর শরীরে অস্ত্রোপচার করার সময় তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। তবে গর্ভে পানির স্বল্পতা ছিল। যে কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। মা রাশিদার কিডনি জটিলতা ছিল। রাশিদার শরীরে রক্ত দিয়েছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এ বিষয়ে আল বারাকা ক্লিনিকের মালিক সাইফুল ইসলামের বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
মাগুরা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফরহাদ হোসেন বলেন, ওই ক্লিনিকের প্যাথলজির কোনো অনুমোদন নেই। এমনকি ক্লিনিকের অনুমোদনের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। ভুল রক্ত দেওয়ার কারণে ওই প্রসূতি ও নবজাতকের এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, মাগুরা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে ইতোমধ্যে সাতটি অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকটি ক্লিনিক তালিকায় রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহল অবৈধ ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় অবৈধ ক্লিনিক বিরোধী অভিযান নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একেএম অপূর্ব/এনএ