রিপন বিশ্বাস (ডানে)

‘বিকেলে ফোন করে বলেছিলেন বাড়ি আসছি। কিন্তু আজ ১০ দিন হতে চলল আমার স্বামীর কোনো খোঁজখবর নেই। এখনো প্রতীক্ষায় আছি কবে সে বাড়ি ফিরবে।’

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন মাগুরা সদর উপজেলার আঠারোখাদা ইউনিয়নের কৃষ্ণবিলা গ্রামের নিখোঁজ হওয়া রিপন বিশ্বাসের স্ত্রী শিপ্রা বিশ্বাস। শুধু শিপ্রা বিশ্বাসী নন, রিপনের পথ চেয়ে আজও বসে আছে তার দুটি শিশুসন্তান।

নিখোঁজ রিপন বিশ্বাস (৩৫) বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। প্রায় ৯ বছর ধরে তিনি সেখানে চাকরি করছিলেন।

শিপ্রা বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি আমার শাশুড়ি অসুস্থ থাকায় তার মাগুরায় আসার কথা ছিল। বিকেলে তিনি আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন এবং অফিস শেষে বাড়ি আসবেন বলে জানান। কিন্তু সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে তার মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া রায়।

এদিকে গত ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মধুমতি নদীর শেখ হাসিনা সেতুর ওপর থেকে রিপন বিশ্বাসের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করেছিল। এরপর এ নিয়ে মহম্মদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রিপনের স্ত্রী শিপ্রা বিশ্বাস।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে গিয়ে দেখি, রিপনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শেখ হাসিনা সেতুর ওপর পড়ে আছে। পরে মোটরসাইকেল, হেলমেট ও রিপনের ব্যবহৃত একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। এরপর ডুবুরিদল মধুমতী নদীতে খোঁজ চালায়। আশপাশের এলাকায়ও রিপনের সন্ধান করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো হদিস মেলেনি তার।

শিপ্রা বিশ্বাস আরও বলেন, রিপনের কর্মক্ষেত্রে বা অন্য কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো ঝামেলা ছিল না বলেই আমি জানতাম। তাই তার সঙ্গে আসলে কী হয়েছে, কিছুই ধারণা করতে পারছি না।

রিপন বিশ্বাসের সহকর্মী ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের সিনিয়র অ্যারিয়া ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার দিন (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বাড়ি যাওয়ার জন্য রিপন ছুটি চেয়েছিলেন। বিকেলে অফিস থেকে তিনি বের হন। এরপর থেকেই আমরা তার কোনো খোঁজখবর পাইনি। তার পরিবারের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।

ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের থানা পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে বোয়ালমারী থানা পুলিশও তার সন্ধান করছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর আমরা বের করতে পারিনি। পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ কে এম অপূর্ব/এনএ