টাকার জন্য নবজাতক বিক্রি
হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতক বিক্রির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান পালস এইড জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে বিল পরিশোধে চাপ দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি উপজেলার হানিরপাড় গ্রামের আলম মিয়ার স্ত্রী তামান্না বেগম প্রসব ব্যথা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার ছেলেসন্তান জন্ম নেয়। পরে ২৮ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২৭ হাজার টাকার বিল দাবি করে। টাকা দিতে না পেরে ষাটনল এলাকার বাসিন্দা শিমলা আক্তারের কাছে ৫০ হাজার টাকায় নবজাতকে বিক্রি করেন তামান্না আক্তার।
বিজ্ঞাপন
পরে বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাজানি হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী শরীফুল হাসান উদ্যোগ নিয়ে ওই নবজাতকের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেন। এছাড়া ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে চাঁদপুর সিভিল সার্জনের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে পালস এইড জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রসূতিকে হাসপাতালের বিল পরিশোধ এবং নবজাতক বিক্রিতে চাপ দেওয়ার সত্যতা পায়নি বলে জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা নবজাতকের মাসহ পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওপর কোনো অভিযোগ করেননি। এছাড়া আমরা বাইরে থেকেও তদন্ত করেছি। এতে এইড জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, আমরা হাসপাতালটির বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাইনি। আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
এ বিষয়ে নবজাতকের মা তামান্না বলেন, আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। সন্তান জন্ম নেওয়ার পর আমাদের কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই সন্তানকে বিক্রি করি। হাসপাতাল থেকে আমাদের জোর করেনি।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. সাহাদাৎ হোসেন বলেন, এইড জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করি। তাদের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এখনো আমার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন আসেনি।
শরীফুল ইসলাম/এসকেডি