করোনা মহামারির প্রভাব পড়েছে মেহেরপুরের ফুল বাজারে। বেচাকেনা না থাকায় সংগ্রহ করা ফুলে পচন ধরতে শুরু করেছে। ফুল পচার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মনে চলে এসেছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

পহেলা ফাগুন, ভালোবাসা দিবস আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে ফুল ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎসব উৎসব আমেজ বিরাজ করে। এ সময় তারা চড়াদামে ফুল কিনে আনেন। বছর দুয়েক আগেও ব্যবসায়ীরা বেশ লাভবান হয়েছেন। কিন্তু করোনার কারণে পর পর দুই বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিলাসী ফুল ঘরের স্বত্বাধিকারী মামুন পারভেজ জানান, বসন্ত উৎসবের কারণে প্রায় ৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন রকম ফুল এনেছিলাম। অর্ধেকও বিক্রি হয়নি। কিন্তু ফুল কিনতে হয়েছে চড়া দামে।

একই কথা জানালেন টু স্টার ফুল মেলার শাহিন ও শাহেদ। তারা জানায়, ফুল পসরা সাজানো আছে। অনেকেই এসে ছবি তুলে তা বন্ধুদের মোবাইলের মাধ্যমে পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরিবারের অনুশাসন ভেঙে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। ফলে ফুল বিক্রিতে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে।

মেহেরপুর বড় বাজারের টুটুল ফুল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. টুটুল হোসেন জানান, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে ফুল বিক্রির ধুম ছিল। তবে গত কয়েক বছর আর ফুল বিক্রি হচ্ছে না। আমরা প্রতি বছর নিজের জমিতে গোলাপ, রজনীগন্ধা, ডালিয়াসহ বেশ কয়েক রকম ফুলের চাষ করি। নিজের দোকানে খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারি বিক্রি করে কয়েক লাখ টাকা লাভ করতাম। করোনা মহামারির কারণে সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মোটামুটি ফুল বিক্রি হতো। এখন দোকানের টবে রয়ে গেছে ফুল। ফুলের পরিবর্তে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন সবাই। 

ফুলব্যবসায়ী রাশেদুজ্জামান জানায়, তিনি এক সময় ফুলের ব্যবসা করে সংসারের খরচ মেটাতেন। বর্তমানে ফুল বেচাকেনা না হওয়ায় ফুলের ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসা শুরু করেছি।

মেহেরপুরের গাংনী মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রমজান আলী জানান, প্রতিবারই বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে। করোনা মহামারির কারণে সেটি করতে পারেনি বিভিন্ন সংগঠন। ফলে ফুলের চাহিদা কমে গেছে। 

আকতারুজ্জামান/এসপি