আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করীমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর করে আদালতের বিচারক মো. রবিউল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

এদিকে মেয়রকে কারাগারে পাঠানোর সংবাদে তার নেতাকর্মীরা খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের আদালতের সামনেসহ একাধিক স্থানে সড়ক অবরোধ করেন। মেয়রকে কারাগারে নেওয়ার সময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দেন তারা। এ সময় সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন মেয়রের কর্মী-সমর্থকরা। পরে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

আদালতে আসামিপক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী নকীব সাইফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি একে আজাদ ফিরোজ টিপুসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিলন কুমার ব্যানার্জি।

এই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করলে গত ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ  তাদেরকে তিন সপ্তাহের মধ্যে  নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, অবৈধ নিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করিমের নামে গত বছরের ২৫ নভেম্বর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন । খুলনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন।

এর আগে ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে নামে দুদকের খুলনা কার্যালয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট পৌরসভায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে ১ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা আত্মসাতের অপরাধে মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।

অন্যদিকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বাগেরহাটে আবাহনী ক্লাবের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ এবং বাগেরহাট ডায়াবেটিক হাসপাতাল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করে এক কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু বলেন, পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। যেহেতু মেয়র শারীরিকভাবে অসুস্থ, সেহেতু তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত তাকে চিকিৎসা করানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জি বলেন, যা ঘটেছে আপনারা দেখেছেন। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।

তানজীম আহমেদ/আরএআর