সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ উজির মিয়া নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন। তদন্ত কমিটিকে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উজির মিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বিকেল ৩টায় পাগলা হাইস্কুল মাঠে জানাজা শেষে শত্রুমর্দন গ্রামের বাঘেরকোণা পঞ্চায়েত কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

উজির মিয়ার স্বজনদের দাবি, চলতি মাসের প্রথম দিকে শত্রুমর্দন গ্রামে ১০-১২টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। উজির মিয়ার বাড়িতেও চুরি হয়। তিনি থানায় গিয়ে পাশের গ্রাম রসুলপুরের শামীম আহমদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় চুরির অভিযোগ করেন। পরে শামীম আহমদ নিজে পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে জানান- চুরি করা মালামালের ভাগ উজির মিয়াও পান। 

এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ উজির মিয়াকে থানায় ধরে এনে বেধরক মারপিঠ করে। শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষ, পার্ডন কুমার সিংহ ও এএসআই আক্তারুজ্জামান গ্রামে গিয়ে চোর সন্দেহে উজির মিয়াকে থানায় নিয়ে যান। ১০ ফেব্রুয়ারি জামিন পান উজির মিয়া। থানায় থাকার সময় বেধরক মারপিঠে অসুস্থ উজির মিয়াকে ওই দিনই গভীর রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়ি এলেও তিনি সুস্থ হননি, সোমবার তার মৃত্যু হয়। 

এ ঘটনায় দুপুরে উজির মিয়ার মরদেহ নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিহতের স্বজনদের উপস্থিতিতে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জমা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছেন। এ ঘটনায় কেন এতো মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথে নামলেন, তা তদন্ত করে দেখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি কমিটি করা হবে।

সাইদুর রহমান আসাদ/আরএআর