দেশে ব্যবহৃত স্মার্টফোনের ৮৫ শতাংশই স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আসছে। তাই বিদ্যমান শুল্ক ও করছাড়ের সুবিধা ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। 

রোববার জাতীয় রাজস্ব রোর্ডে (এনবিআর) প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা বলেন, এ খাতের জন্য সরকারের দেওয়া সুবিধার কারণে মোবাইল ফোনের আমদানি নির্ভরতা কমেছে। স্থানীয় বাজারের চাহিদার বড় অংশই এখন শিল্পগুলো পূরণ করছে। 

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দেশে ১৪টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। এখন দেশে ব্যবহৃত স্মার্টফোনের ৮৫ শতাংশই স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পূরণ করছে। 
 
তিনি বলেন, গত বছর এনবিআরের দেওয়া সুবিধার কারণে ফিচার ফোনের চাহিদার ৫০ শতাংশের বেশি তারা পূরণ করতে পেরেছে। চলতি বছর শেষে এ হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হবে। তাই বিদ্যমান সুবিধা ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে স্থানীয় মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো কাঁচামাল আমদানিতে ১ থেকে ১৫ পর্যন্ত শুল্ক ও কর পরিশাধ করে, যেখানে মোবাইল ফোন আমদানিতে শুল্ক-করের পরিমাণ ৫৭ শতাংশ। এছাড়া হাইটেক পার্কে মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী কোম্পানি স্থাপনে ১০ বছর পর্যন্ত কর অব্যাহতির সুবিধা রয়েছে। 

আলোচনায় ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকেও স্থানীয় শিল্পের জন্য সরকারের দেওয়া বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়। 

এ সময় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাহী পরিচালক আবু ঈসা মো. মাঈনুদ্দিন তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের কর অব্যাহতির সুবিধা ২০২৫ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেন। 

তিনি বলেন, অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ সুবিধা ২০২৫ সাল পর্যন্ত শুনে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যান। বিনিয়োগ আনতে এ বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। 

আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান জানান স্থানীয় শিল্পের জন্য বিদ্যমান সুবিধা দীর্ঘমেয়াদে অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর স্থানীয় শিল্পকে দেওয়া বিভিন্ন ধরনের নীতি সহায়তা আস্তে আস্তে উঠাতে বাধ্য হব। এজন্য কোয়ালিটি প্রোডাক্ট ও কম্পিটিটিভ প্রাইস দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা তথা বিদেশি পণ্য ঠেকাতে হবে। কাজটি করতে হবে আপনাদের (স্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের)। 

কখনো কখনো স্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের দেওয়া নীতি সহায়তার উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে মুনিম বলেন, অনেক সময় আমাদের সাপোর্ট নিয়ে আপনারা পারফর্মেন্স দেখাতে পারেন না।

আরএম/আরএইচ