ভারত থেকে আরও ১ লাখ মে. টন চাল কিনছে সরকার

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) চুক্তির মাধ্যমে ভারত থেকে এক লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ চাল কেনায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৫ কোটি ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক অনলাইন বৈঠকে এ ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। তিনি জানান, আজকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পঞ্চম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ষষ্ঠ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় মোট পাঁচটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৯৪ কোটি দুই লাখ ৪৭ হাজার ৯০ টাকা। পুরো অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার (জিওবি)। সভায় অর্থনৈতিক কমিটির তিনটি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য পাঁচটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে ছিল- বিদ্যুৎ বিভাগের তিনটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একটি করে।

ক্রয় কমিটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর থেকে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে চাল ও গম আমদানির লক্ষ্যে ক্রয় প্রক্রিয়ার সময় হ্রাস করার নীতিগত অনুমোদন দেয়। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) এক লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল ভারতের ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ কনজুমার ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া থেকে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কমিটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন উপলক্ষে ড্রোন শো, এরিয়াল শো ও ফায়ারওয়ার্ক শো অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (DPM) অনুসরণের অনুমোদন দেয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ডেভেলমেন্ট রেডিং হেভিট প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে দুই বছর মেয়াদী ৮২ কোটি ৭০ লাখ ৫১ হাজার ৭৫৬ টাকায় পরামর্শক সেবা ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ)’ প্রকল্পের ২৬৪ কিলোমিটার ১১ কেভি ও ৩৩ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল, বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ১০৭ কোটি ৯৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৪ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও কুষ্টিয়ার কুমারগাঁও ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল (ভাড়া) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ট্যারিফ প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা এক দশমিক ৯৭৫২৮৮ টাকা হিসেবে বর্ধিত চুক্তিতে প্রায় ৮৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা অতিরিক্ত বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে বেসরকারিভাবে পরিচালিত আশুগঞ্জ ৫৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ পাঁচ বছর বৃদ্ধির জন্য ইউনাইটেড এনার্জির সঙ্গে ট্যারিফ প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা দুই দশমিক ৪৩ টাকা হিসেবে ক্রয় চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্ধিত চুক্তিতে প্রায় ৪৫১ কোটি ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

এনএম/এসএসএইচ/এফআর