কফি-কোকোর উৎপাদন বাড়াতে পাঁচ দেশকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। 

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) এডিবির প্রধান কার্যালয়ে এডিবি ও এলডিসির মধ্যে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দেশগুলো হলো- ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম।

এডিবি জানায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং লুইস ড্রেফাস কোম্পানি বি.ভির (এলডিসি) মধ্যে ১০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। এলডিসি ফ্রান্সের একটি বহুজাতিক কোম্পানি। কৃষি খাদ্য প্রসেসিংয়ের জন্য কোম্পানিটি বিখ্যাত। কোম্পানির হেড অফিস নেদারল্যান্ডসে। 

সংস্থাটি জানায়, করোনা সংকটে পড়া অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো পুনরুদ্ধার করতেই ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য ১০ কোটি ডলারের ঋণ স্বাক্ষর হয়েছে। মহামারি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কৃষকদের রক্ষা করে জীবনমান উন্নত করা হবে। এই ঋণটি ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামকে দেওয়া হবে। এসব দেশে এলডিসি অপারেশনের মাধ্যমে ৫০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র কৃষককে কফি, তুলা এবং চাল সংগ্রহের জন্য অর্থায়ন করে সহায়তা করবে। এটি নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল এবং ক্ষুদ্র ধারক কৃষকদের জন্য নির্ভরযোগ্য আয়ে সহায়তা করবে এবং মহামারির কারণে সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার প্রভাবকে বন্ধ করবে। 

এডিবি জানায়, এটি এই কৃষকদের তারল্য সংকট নিরসনে কাজ করবে এবং করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা করা হবে। এই চুক্তির আওতায় কৃষকদের অগ্রিম অর্থ দেওয়া হবে। কফি ও কোকো চাষের কৌশল, ডেটা সমাধান এবং আর্থিক স্বাক্ষরতা প্রবর্তনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কৃষকদের সক্ষমতা উন্নত করার ওপরও ফোকাস করা হবে।

একটি সময়পোযোগী প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে জলবায়ু-স্মার্ট কোকো এবং কফি চাষের সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর্থিক স্বাক্ষরতার সক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে। মহামারি থেকে কৃষকদের পুনরুদ্ধারে আরও সহায়তা করবে। প্রযুক্তিগত সহায়তায় কৃষকরা উপকৃত হবে। মূলত ক্ষুদ্র কৃষকের উন্নয়নে এডিবির ঋণটি ব্যবহার করবে এলডিসি। একটি সহগামী প্রযুক্তিগত সহায়তা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। যা ভারতে তুলা চাষি এবং ইন্দোনেশিয়ার কফি চাষিদের জন্য টেকসই এবং জলবায়ু-সহনশীল কৃষি অনুশীলনের সুবিধাগুলোকে শক্তিশালী করবে। ভারতে তুলা ক্ষেতে ড্রিপ সেচের পাইলট-পরীক্ষা এবং ইন্দোনেশিয়ায় আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। এর অধীনে চার হাজার নারী কৃষক উপকৃত হবেন।

এলডিসির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এবং এশিয়া অঞ্চলের প্রধান জেমস ঝু বলেন, এলডিসি শীর্ষ বাণিজ্যিক এবং কৃষি পণ্যের প্রসেসর হিসাবে কাজ করে। এলডিসি ক্ষুদ্র কৃষকদের ক্ষমতায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাদের কাজ মূলত বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার চাবিকাঠি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুবিধার জন্য টেকসই চাষ পদ্ধতি ব্যবহার জরুরি। সঠিক সরঞ্জাম, জ্ঞান এবং সহায়তার মাধ্যমে, কৃষকরা পরিবেশ সংরক্ষণের  সঙ্গে সঙ্গে  তাদের ফলন এবং জীবিকাকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে উন্নত করতে পারে। আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে এডিবির সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।

এসআর/জেডএস