উৎপাদনশীলতা পুরস্কার পাওয়া ৩১ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা

উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য তৈরিতে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার পেয়েছে ৩১ প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি এ কার্যক্রমে অনবদ্য ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ দুটি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন ক্রেস্ট।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আনুষ্ঠানিকভা‌বে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের হা‌তে ট্রফি ও সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) আয়োজনে ‘ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ এবং ‘ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ পুরস্কার দেওয়া হয়। শিল্পসচিব কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও এফবিসিসিআই এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, এনপিওর পরিচালক (যুগ্ম সচিব) নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, সরকারের রূপকল্পগুলোকে সাফল্যের সঙ্গে অর্জন করতে উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। রূপকল্প ২০৩১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের কৌশল হিসেবে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে শিল্পায়নকে মূলভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার আধুনিক শিল্পায়নে বেসরকারি উদ্যোক্তা উন্নয়নের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হবে।

এনপিও উৎপাদনশীলতার পুরস্কার প্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজ নিজ শিল্প কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প কারখানার জন্যও মডেল হিসেবে পরিচিত হবেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও এর উন্নয়নে কাজ করছে। কল-কারখানায় শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেলে মালিক, শ্রমিক, ভোক্তা এমনকি সরকারও তার সুফল পেয়ে থাকে। দক্ষতার সঙ্গে এবং কম খরচে পণ্য বা সেবা উৎপাদন মালিক পক্ষের আকাঙ্ক্ষা থাকে সব সময়ই।

প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের প্রতি আরও যত্নশীল হয়ে তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং গুণগতমানের পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য তৈরিতে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার বিরতরণ

এফবিসিসিআই এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ২০২০ সালে করোনা মহামারীর এ চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ শিল্পখাত আবারও ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের সহযোগীতা ও এফবিসিসিআই এর সকল সদস্য ও অ্যাসোসিয়েটদের সফল চেষ্টায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি পূর্বে মত ঘুরে দাঁড়াবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শিল্পসচিব বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর সংস্থা এবং শিল্প উদ্যোক্তাসহ সবাইকে নিয়েই প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ সফলভাবে অর্জন করতে হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৩৫.৩৬ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে শিল্প উদ্যোক্তাদের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি এন্ড কোয়ালিটি অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯-এ বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে- বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস্ লি., আর এফ এল ইলেকট্রনিক্স লি., রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি., ইস্পাহানি টি লি., নাটোর এগ্রো লি., প্লামি ফ্যাশনস্ লি., ইউনিভার্সাল জিন্স লি., জেনেসিস ওয়াশিং লি., আর এফ এল প্লাস্টিকস্ লি., ডিউরেবল প্লাস্টিক লি., আকিজ জুট মিলস্ লি., আইয়ান জুট মিলস্ লি., ওয়ান ব্যাংক লি., সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স লি., ব্রেইন স্টেশন ২৩ লি., হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেডকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে- গেট ওয়েল লিমিটেড, নর্দান ফ্লাওয়ার মিলস্ লি., রোমানিয়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি., কনসেপ্ট নীটিং লি., বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল লি., প্যাকম্যাট ইন্ডাস্ট্রিজ লি., বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লি., কিউ এন এস শিপিং লজিস্টিকস লিমিটেডকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়া ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার দেওয়া হয়, এস আর হ্যান্ডিক্রাফটস্ ও রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেডকে। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার পেয়েছে মাসকো ডেইরি এন্টারপ্রাইজ, জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্যাটাগরিতে গাজী ওয়্যারস্ লি., কেরু এন্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লি., বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট পুরস্কার পেয়েছে।

ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯-এ ট্রেডবডি ও অ্যাসোসিয়েশন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ অ্যাসপ্লায়ার্স ফেডারেশন ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এসআই/এমএইচএস