২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২০ লাখ ৮ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মাসিক ৭৫০ টাকা হারে ভাতা দেওয়া হয়েছে। উপকারভোগীর সংখ্যা আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৫৭ লাখ বৃদ্ধি করে ২০ দশমিক ৮ লাখের স্থলে ২৩ দশমিক ৬৫ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসময় মাসিক ভাতার হার ৭৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি করে ৮৫০ টাকা করা হবে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতা বাবদ ২ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা জানান।

এর আগে বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাজেট বক্তৃতার মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ শুরু করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার চতুর্থ বাজেট। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী জানান, সরকার দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে প্রবীণদের অধিকার সমুন্নত রাখায় সচেষ্ট। দুস্থ প্রবীণ ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষায় ব্যাপক পরিসরে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হচ্ছে এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতার ক্ষেত্রে প্রবীণ নারীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছর থেকে জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ৫৭.০১ লাখ ভাতাভোগীর জন্য বয়স্ক ভাতা খাতে ৩ হাজার ৪৪৪.৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা চলমান থাকবে। ভাতা কর্মসূচির বাইরেও সরকার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি চালু করেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে যার উপকারভোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ এবং বার্ষিক বরাদ্দ ছিল ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, দেশের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ও জীবন ঝুঁকি হ্রাসকল্পে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের আওতায় ‘বঙ্গবন্ধু প্রতিবন্ধী সুরক্ষা বীমা’ চলতি বছরের জাতীয় বিমা দিবসে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন করা হয়েছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এএজে/এসএসএইচ