সপ্তাহের ব্যবধানে চাল ও তেলের দাম আবারও বেড়েছে। সপ্তাহ ঘুরতেই প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ২-৪ টাকা। আর তেলের দাম কার্টুন প্রতি বেড়েছে ৮০-৯০ টাকা। মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। তবে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে সবজির দাম। 

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানী ঢাকার কাপ্তান বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। 

সরজমিনে জানা যায়, কেজিপ্রতি টাইগার মোরগ ২৯০ টাকা, পাকিস্তানি কক ২৬৫ টাকা, দেশি মুরগি ২৯৫ টাকা, দেশী মোরগ ২৭৫ টাকা, ফার্মের মুরগি ১০০ টাকা ও সোনালী মোরগ ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি গরুর কলিজা ও তিল্লী ৫০০ টাকা, গরুর মগজ আকারভেদে প্রতি পিস ২৫০-৩০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা। প্রতি পিস ছাগলের কলিজা ২০০ টাকা। প্রতি কেজি ছাগলের মাংস ৮৫০ টাকা ও গরুর মাংস ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিভিন্ন ধরনের শাক পাইকারিতে ৮ টাকা ও খুচরায় ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লাউ শাক ৩০ টাকা, কলই শাক ১০ টাকা, থানকুনি পাতা ১০ টাকা, বর্তা শাক ১০ টাকা, সরিষা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ৮-১০ টাকা, ডাটা হালি প্রতি ১৫ টাকা, লালশাক ১০ টাকা, পুইশাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শাক ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা বলেন, শাক সবগুলো বিক্রি হয়ে যায়, তবে শাকের দাম অনেক কমে গেছে। দোকান ভাড়া, গাড়ি ভাড়া দিয়ে কোনো রকমে ব্যবসা করছি। এত ভালো যাচ্ছে না।

প্রতি পিস পাতাকপি ও ফুলকপি ২০ টাকা, আকারভেদে লাউ প্রতি পিস ২০-৫০ টাকা। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ও ধনিয়া পাতা ৬০ টাকা, বিচিসহ শিম ৩০ টাকা, বিচিছাড়া শিম ২৫-৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, স্কোয়ার্স ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা, ক্যাপচিকাম ১০০ টাকা, ক্ষিরা ৪০ টাকা, বিট ১২০ টাকা, ব্রকলি ৪০ টাকা, ঢেড়স ১২০ টাকা, মটরশুটি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী নুর নবী বলেন, ‘ব্যবসা ভালো যাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা আছে। দামও বেশি বাড়ে নাই। তবে ক্রেতা কমে গেছে।’

প্রতি কেজি পোয়া মাছ ৪০০ টাকা, বাইলা মাছ ১০০০ টাকা, কাজলি মাছ ৯০০ টাকা, রিডা মাছ ৬০০ টাকা, বাইন মাছ আকারভেদে ৫০০-১০০০ টাকা, পুঁটি ৬০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ টাকা, আই মাছ ২০০ টাকা, বাতাসা মাছ ৪০০, মৃত-জীবিতভেদে শোল মাছ ২০০-৫০০ টাকা, আকারভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে পিস প্রতি ৫০০-১০০০ টাকায়। মৃগেল মাছ ১৭০-২০০ টাকা, আকারভেদে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৩০-১৮০ টাকা, আকারভেদে সিলভার কার্প মাছের দাম ১৫০-২০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৬০০-৭০০ টাকা, সরপুঁটি মাছ ১৫০-২০০ টাকা ও বোয়াল মাছ ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ ব্যবসায়ী মো. হাকিম বলেন, ‘মাছের দাম তেমন বাড়েনি। তবে ক্রেতা সংকটে ভুগছি আমরা, আগের তুলনায় মানুষ কম আসে। সামনে মনে হয় আরও কমে যাবে। কারণ বর্ষাকাল আসছে।’

এদিকে প্রতি কেজি আলু ১৫ টাকা, পেঁয়াজ ২৮-৩০ টাকা, রসুন ১১০ টাকা, আদা ৬০ টাকা। ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজার এখনও চড়া। প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৬৬ টাকা, কাটারীভোগ ৮৫ টাকা, চিনিগুড়া পোলাও চাল ৯৫ টাকা, হাছকি নাজির ৫৫ টাকা, পোলাও চাল ১০০ টাকা, আটাশ ৫২-৫৪ টাকা, পাইজাম ৫০ টাকা, মিনিকেট চাল ৬৫ টাকা, জিরা নাজির ৬৮-৭০ টাকা, কাজল লতা চাল ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকান মেসার্স ইউসুফ স্টোরের কর্মচারী মোহাম্মদ আরমান বলেন, ‘কোম্পানিরা বলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেশি তাই বাড়ছে। চালের দাম বাড়ছে কারণ ধানের দাম বেশি।’

দেশি মসুরের ডাল ১০০ টাকা, ক্যাঙ্গারু মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, আস্ত বুটের ডাল ৮৫ টাকা, এ্যাংকর ডাল ৪৫ টাকা, খেশারি ডাল ৪৫ টাকা, মাসকালাই ডাল ১৪০ টাকা ও বোল্ডার মসুর ডাল ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে তেলের দাম। বাক্স প্রতি ৮০-৯০ টাকা বেড়েছে তেলের দাম। প্রতি লিটার তেল রুপচাঁদা ১৩৫-১৪০ টাকা, তীর মার্কা তেল ১৩২ টাকা, বসুন্ধরা ১৩০-১৩৫ টাকা, চাঁন তেল ১৩০ টাকা, পুষ্টি তেল ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নোয়াখালী স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. জসিম বলেন, মানুষ এখন বাজারে আসে না। আসলেও ১-৫ কেজি এভাবে চাল নিয়ে যায়। ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। আগে মানুষ বস্তা করে এক সঙ্গে চাল নিয়ে যেত। এখন খুচরাও কম বিক্রি হচ্ছে। সবাই এখন শৌখিন হয়ে গেছে। বাসার সামনের দোকান থেকে মালামাল কিনে নেয়, বাজারে আসে না। ভোর থেকে এখনও বিক্রি হয়নি তেমন।’

ওয়ারি থেকে বাজার করতে আসা ব্যাংকার শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, ‘চালের দাম আরও বেড়ে গেছে। তেল কিনলাম তাও বাড়তি দামে। প্রতিনিয়ত এভাবে চাল-তেলের দাম বাড়লে অন্য কিছু আর কেনা লাগবে না।’

এসএসএইচ