রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে হু হু করে। এরই মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো আবার রাশিয়ার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। তবে সেই নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে রাশিয়া থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে ভারত। 

ভারত সরকারের বক্তব্য, দেশের মানুষের স্বার্থ আগে। যেখানে হু হু করে তেলের দাম বাড়ছে সেই পরিস্থিতিতে আগে দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ, সর্বোপরি জনগণের স্বার্থ আগে বিবেচিত হয়। 

রাশিয়া থেকে তেল কেনার এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, জ্বালানির উচ্চ দাম কমানোর জন্য় সব দেশই চেষ্টা করবে। ভারতও সেই কাজই করছে। 

মঙ্গলবার ব্যাংককে ভারতীয় কমিউনিটির একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, বর্তমানে এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেকটি দেশই নিজের নাগরিকদের সুবিধার দিকটি দেখবে। জ্বালানির উচ্চ দামের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করবে। আমরাও সেটাই করছি। একবার যখন আপনি সৎ ভাবে পুরো বিষয়টা তুলে ধরেন তখন মানুষে তা গ্রহণ করে নেয়। তারা সবসময় সেই বিষয়টির প্রশংসা নাও করতে পারেন। তবে যখন আপনি খুব বেশি চালাকি না করেন এবং নিজের স্বার্থের বিষয়টি সরাসরি তুলে ধরেন, তখন আমার মনে হয় গোটা বিশ্ব বিষয়টিকে কোনো না কোনো ভাবে মেনে নেয়। 

তবে তিনি এও স্পষ্ট করেছেন যে রক্ষণাত্মকভাবে ভারত এই পদক্ষেপ নেয়নি। ভারতের জনগণ উচ্চ জ্বালানির দাম সইতে পারবে না। তাই সেই কষ্ট লাঘব করতে রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

তিনি জানিয়েছেন, ভারত প্রথম থেকেই তার এই স্বার্থ সম্পর্কে পরিষ্কার ছিল। তিনি এদিন আরও বলেছেন, এ দেশে মাথা পিছু আয় ২ হাজার ডলার। এখানে অনেক মানুষেরই উচ্চ হারে জ্বালানি কেনার ক্ষমতা নেই। এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা যে আমি তাদের জন্য শ্রেষ্ঠ জিনিসটাই করব। 

তিনি বলেছেন, আমেরিকার মতো দেশও ভারতের এই অবস্থান সম্পর্কে অবগত। প্রসঙ্গত, এর আগেও রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার সিদ্ধান্তের সপক্ষে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কথা বলতে দেখা গেছে জয়শঙ্করকে। তিনি গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বলেছিলেন, ইউরোপ এক বেলায় যতটা তেল কেনে ভারত একমাসে রাশিয়া থেকে তার অনেক কম তেল আমদানি করে। 

এনএফ