২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। এর পরদিনই আজ মাছ-মাংসের বাজারে উত্তাপ দেখা গেছে। ক্রেতা-জনসাধারণরা বলছেন, বাজেটের পরদিনই মাছ-মাংসের দাম বেড়ে গেছে। যেকারণে বছরের বাকি দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে তাদের। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারের নিজস্ব গতিতেই দাম ওঠানামা করছে।

শুক্রবার (২ জুন) সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করলে এসব কথা উঠে আসে।

আরও পড়ুন>>শুক্রবার এলেই দাম বাড়ে মাছ মাংস সবজির

বাজারে দেখা গেছে, গরুর মাংস কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি। বাগদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৯৫০ টাকা, নদীর চিংড়ি ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি, ছোট ইলিশ (৫০০/৬০০ গ্রামের) বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি। মাঝারি রকমের (১২০০ গ্রাম) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা। আর দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা কেজি পর্যন্ত।

এছাড়াও রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, কাতল মাছে ৩০০ টাকা, দেশি পুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি, বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।

বাজার করতে আসা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনদিন মাছ-মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আজ দেখছি মাছের বাজার চড়া। যেকারণে কিনতে গেলেও বারবার হিসাব করতে হয়। এখন আর আগের মতো প্রতি সপ্তাহেই গরুর মাংস কেনা যায় না।

আরও পড়ুন>>সবজির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ, মাংস ও ডিমের দাম

বাজারে বাজেটের প্রভাব কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজেটের মূল প্রভাব হয়তো আরও কিছুদিন পর পড়বে। তবে এখন যেটা দেখছি সেটা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অংশ। বাজেট ঘোষণা হতেই বলা হচ্ছে সব জিনিসের দাম বাড়বে। এসব শুনে ব্যবসায়ীরা বাজেটের পরদিনই দাম বাড়িয়ে দিতে শুরু করেছে।

মাছ কিনতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, ছোটখাটো ব্যবসা করি, বাজারে এলে নিজেকে খুবই অসহায় মনে হয়। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কোথায় গিয়ে ঠেকে বলা মুশকিল। কিন্তু সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের আয় রোজগার তো ঠিকই আগের মতোই আছে।

ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মো. সাইদুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম থেকে গত সপ্তাহ থেকে ইলিশ আসছে না। ইলিশ ধরায় ওইসব এলাকায় নিষেধাজ্ঞা আছে। যেকারণে দামটা একটু বেশি। এখন মূলত বাজারে আসছে নদীর ইলিশ। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই দাম কমে আসবে।

আরও পড়ুন>>শীতের সবজিতে স্বস্তি, মাছের বাজারে আগুন 

ডিআইটি প্রজেক্ট বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা নাঈম হাসান জানান, তিনি গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৮০০ টাকা কেজি। তার ভাষ্যমতে, এরপরও তিনি লাভের মুখ দেখতে পারছেন না।

তিনি বলেন, আগে প্রতি সপ্তাহে দুইটা গরু জবাই করতাম, এখন একটা করি। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। বাজারে গরুর খাবারের দাম বেশি। সেই সঙ্গে যুক্ত হয় পরিবহন খরচ, এটাও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি।

টিআই/এমএ