ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র একদিন। কিন্তু এখনো বোনাস হয়নি ৩৪৬টি বড় কারখানার শ্রমিকদের। জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন হয়নি ১ হাজার ৬৮৪টি কারখানায়। আর মে মাসের বেতন হয়নি ১০৩টি কারখানায়।

পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বেপজা, পাটকল এবং শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অথচ গত ৬ জুন ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং মে মাসের সম্পূর্ণ বেতন ও জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশনা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

শিল্পাঞ্চল পুলিশের সূত্র মতে, দেশে বর্তমানে ছোট-বড় মিলে ৯ হাজার ৯১৫টি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২৭ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত বড় ৩ হাজার ১৬৪টি কারখানার মধ্যে ঈদের বোনাস দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৮১৮টিতে। যা শতাংশের হিসাবে ৮৯ দশমিক ৬ শতাংশ। ৩৪৬টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। যা শতাংশের হিসাবে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর বাকি ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার সঠিক চিত্র জানা যায়নি।

একই সময়ে বড় কারখানার মধ্যে জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৫০০টি কারখানা শ্রমিকদের। ১ হাজার ৬৮৪টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়নি। যা শতাংশের হিসাবে ৫২ দশমিক ৮৯ শতাংশ বাকি। এছাড়া মে মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৬১টি কারখানায়। অর্থাৎ ১০৩টি কারখানায় এখনো মে মাসের বেতনও দেওয়া হয়নি।

ঈদ বোনাস

৯ হাজার ৯১৫টি কারখানার মধ্যে বড় কারখানা রয়েছে ৩ হাজার ১৬৪টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৬৮৪টি কারখানায় ঈদুল আজহার বোনাস দেওয়া হয়েছে। এখনো ৩৪৬টি কারখানার শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া হয়নি।

এসব কারখানার মধ্যে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে বোনাস হয়েছে ১৪১২টি কারখানায়। ২১২টি কারখানায় এখনো ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি।

নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৬৪৬টি কারখানার শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া হয়েছে। এখনো ৫৩টি কারখানায় ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ৩৫৯টির মধ্যে বোনাস দেওয়া হয়েছে ৩১৪টিতে। আর বোনাস দেওয়া হয়নি ৪৫টি কারখানা শ্রমিকদের। বেপজার ৩৯২টি কারখানার মধ্যে ৩৮০টির শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এখনো বাকি রয়েছে ১২টি কারখানা।

পাটকল খাতের ৯০টির মধ্যে শ্রমিকদের ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে ৬৬টি কারখানায়। এ খাতের বাকি রয়েছে ২৪টি কারখানার বোনাস। আর বাকি ছোট ৬ হাজার ৭৫১টির কী অবস্থা তা জানা যায়নি।

জুনের প্রথম ১৫ দিনের বেতন

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বড় কারখানাগুলোর মধ্যে জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করেছে ১৫০০টি কারখানা। এখনো জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন পাননি ১ হাজার ৬৮৪টি কারখানার শ্রমিকরা।

বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে জুন মাসের বেতন হয়েছে ৭৭৭টি কারখানায়। অর্থাৎ ৮৪৭টি কারখানায় এখনো জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন হয়নি।

বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টির মধ্যে ৩২৯টি বেতন পরিশোধ করেছে। এখনো বাকি রয়েছে ৩৭০টি কারখানা শ্রমিকরা, বিটিএমএর ৩৫৯টির মধ্যে ১৯১টি কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু ১৮৮টি কারখানায় এখনো বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

বেপজার ৩৯২টি কারখানার মধ্যে ১৫৯টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এখনো বাকি রয়েছে ২৩৩টি কারখানা শ্রমিকদের জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন।

আর ৯০টি পাটকলের মধ্যে ৪৪টি পাটকলের শ্রমিকদের জুনের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এ খাতের ৪৬টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন বাকি রয়েছে।

বড় ৩ হাজার ১৬৪টি কারখানার মধ্যে মোট ১৫০০টি কারখানায় বেতন হয়েছে। যা শতাংশের হিসাবে ৪৭ দশমিক ২৬ শতাংশ। এখনো ১ হাজার ৬৮৪টি কারখানার শ্রমিকদের জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হয়নি। শতাংশের হিসাবে ৫২ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

মে মাসের বেতন

বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে মে মাসের বেতন হয়েছে ১ হাজার ৫৬৬টি কারখানায়। ৫৮টি কারখানায় এখনো মে মাসের বেতন হয়নি।

বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৬৭১ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এখনো ২৮টির বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

বিটিএমএর ৩৫৯টি কারখানার মধ্যে ৩৪৪ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ১৫টির। বেপজার ৩৯২টির মধ্যে ৩৯০ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে দুটির। তবে পাটকল ৯০টিরই বেতন পরিশোধ করা হয়েছে।

এমআই/এসএসএইচ/