করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)। একইসঙ্গে জুয়েলারি শিল্পের জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল চায় ব্যবসায়ীরা।

রোববার (৪ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জুয়েলারি শিল্প বিকাশে ভ্যাটসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়েছে।

বাজুস সভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশে টেকসই জুয়েলারি শিল্পের বিকাশ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, রফতানির সুযোগে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কথা বিবেচনায় নিতে হবে। এদেশের জুয়েলারি শিল্পের সাথে জড়িত ৩০ লাখ মানুষ, ২০ হাজার ব্যবসায়ী ও চার কোটি গ্রাহকের কথা চিন্তা করে আসন্ন বাজেটে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংগঠনটি বলছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু হলে আমাদের গ্রাহকেরা ভ্যাট ছাড়াই আগের মতো পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের জুয়েলারি দোকোনে গহনা কিনতে ভিড় জমাবে। দেশের টাকা দেশের বাইরে চলে যাবে, আর এ দেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে। দেশীয় কারিগরদের পরবর্তী প্রজন্ম গুগলে সার্চ দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। 

বলা হয়েছে, বিদ্যমান ভ্যাট অব্যবস্থাপনার কারণে জুয়েলারি ব্যবসা আজ জুয়েলার্সদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়ে গ্রাহক ও দোকানি পর্যায়ে প্রায়শই বিতর্কের সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় জুয়েলারি খাতে ১.৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপে দাবি জানায় বাজুস নেতারা।

আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়ে তারা বলেন, অনেকের প্রশ্ন বিশ্ববাজারের চেয়ে বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বেশি কেন? একই প্রশ্ন আমাদেরও। স্বর্ণ শতভাগ আমদানি নির্ভর। বিশ্ববাজার থেকে ভরি প্রতি (১১.৬৬৪ গ্রাম) দুই হাজার টাকা কাস্টমস ডিউটি দিতে হয়। এর সঙ্গে বিমানভাড়া ও ব্যাংক সুদসহ আরো খরচ আছে। দেশে বছর প্রতি প্রায় ১৮-৩৬ মেট্রিকটন স্বর্ণের চাহিদা থাকলেও বৈধ উপায়ে আমদানি হয়েছে মাত্র ১০০ কেজির মত। আর যারা আমদানি করেছে তারাও লোকসানের সম্মুখীন। তাই আমদানি পর্যায়ে কাস্টমস ডিউটি দুই হাজার টাকার পরিবর্তে এক হাজার টাকা করার দারি জানান তারা।

এছাড়া বাজুস স্বর্ণ নীতিমালায় জুয়েলারির সব ক্ষেত্রে ২০ বছরের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ নিরুত্সাহিত করার দাবি জানান তারা। এছাড়াও আমদানি জটিলতা নিরসন ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত রক্ষিত মীমাংসিত স্বর্ণ প্রকৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিকট নিলামে বিক্রির জানানো হয়। জুয়েলারি শিল্পের বিকাশে ঢাকার অদূরে একটি বিশেষ ইকনোমিক জোন তৈরির দাবি জানান বাজুস নেতারা।

আরএম/ওএফ