আবাসিক ভবনে অনলাইন ব্যবসা, নজরদারিতে ১৬ প্রতিষ্ঠান
ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অভিযান
ভ্যাট নিবন্ধন না নিয়ে আবাসিক ভবনে অনলাইনে পণ্য বিক্রির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। অভিযানে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনা করা ১৬ প্রতিষ্ঠানকে নজরদারিতে রেখেছে ভ্যাট নিরীক্ষা।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, অভিযানে গোয়েন্দারা ‘আরাজ’ নামক অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রির দলিল জব্দ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, এ জাতীয় আরও অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ব্যবসা করছে যারা ভ্যাটের আওতায় নেই। এপর্যন্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা। ভ্যাট আইন অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট গোয়েন্দা কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, রাজধানীর গুলশানের আবাসিক ফ্ল্যাটে অবস্থিত বিদেশি পণ্যের অনলাইন ব্যবসা ‘আরাজ’ এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভ্যাট আইন পরিপালন না করে ব্যবসা পরিচালনা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপন
ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে গোয়েন্দারা দেখতে পান যে, ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত আরাজ অনলাইনে বিদেশি পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। স্থানীয় গুলশান ভ্যাট সার্কেলে এই অনলাইন ব্যবসার ভ্যাট জমার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এর মালিকের নাম সাজ্জাদ আলী শরীফ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দা দল গত ২৭ ডিসেম্বর (রোববার) অভিযান পরিচালনা করে।সংস্থার উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
অভিযোগকারী ওই ব্যক্তি জানান, ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী অনলাইনে পণ্য বিক্রি করায় শোরুমের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ব্যবসার প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অভিযানে ঐ আবাসিক ঠিকানায় গোয়েন্দারা তাদের ভ্যাট নিবন্ধন দেখতে পায়নি। সংশ্লিষ্ট ভ্যাট সার্কেলে যাচাই করে দেখা যায়, ঐ সার্কেলে বিগত মাসগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি কোনো রিটার্ন জমা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি বিগত তিন বছর ধরে অনলাইনে অলঙ্কার, নারীদের পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে এই অনলাইন ব্যবসার উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। অভিজাত এলাকার বাসায় তারা দীর্ঘদিন ধরে দামি ও এক্সক্লুসিভ বিদেশি পণ্য বিক্রি করছে।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, আরাজ এর অধিকাংশ পণ্যই পাকিস্তানের তৈরি। ব্যাগেজ ও পার্সেলে এসব পণ্য এনে বাসায় বসে তারা অনলাইনে বিক্রি করছে।তবে ভ্যাট আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন না নিয়ে এবং কোনো মাসিক রিটার্ন জমা না দিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।বিদেশ থেকে আনা এসব পণ্যের তারা যথাযথ শুল্ক কর দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে ভ্যাট গোয়েন্দার দল।
এরইমধ্যে ভ্যাট গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট ২টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে হিসাব তলব করেছে।এই হিসাব আমলে নিয়ে পরে ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে বলে জানায় ভ্যাট গোয়েন্দা।
আরএম/জেডএস