ব্যবসা বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর। মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যভেদে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩০০ শতাংশ।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ই-ক্যাব বলছে, করোনাকালীন সময়ে যেখানে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে সেখানে ই-কমার্সের অনেক প্রতিষ্ঠান অতীতের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ডেলিভারি দিয়েছে। নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ৫০ হাজার মানুষের।

ই-ক্যাব সূত্র জানায়, করোনাকালীন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি ভালো করেছে। নিত্যপণ্য ও খাদ্য ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষেত্রবিশেষ ৩০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করেছে। ২০১৯ সালেও দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ শতাংশ। ২০২০ সালে এসে সেই প্রবৃদ্ধি ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

করোনার সময় যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে ভালো করছে তার মধ্যে অন্যতম চালডাল ডটকম। এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইসরাত জাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছর মার্চে ৩ হাজার ডেলিভারি হয়। দুই এক মাসের মধ্যে এই অর্ডার চলে যায় প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজারের। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করি ডেলিভারি দেওয়ার।

তিনি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে কয়েকগুণ ডেলিভারি বেড়েছে। গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা দিয়ে যাচ্ছি আমরা।

ই-ক্যাব জানায়, ২০২০ সালের শেষ ৮ মাসে ই-কমার্সে শুধুমাত্র নিত্যপণ্য লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকার। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি ডেলিভারি হচ্ছে।

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতবারের চেয়ে এবার আরও ভালো সেবা দিতে পারবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। আশা করছি, তাদের প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। ই-কমার্স সব সময়ই সম্ভাবনাময়। করোনাকালীন সময়ে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান ভালো করছে। নিয়ম মেনে গ্রাহককে সর্বোচ্চ সেবা দেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আর গ্রাহককেও সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান ফেসবুক পেজ খুলে নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে। যা গ্রাহকের বিশ্বাস নষ্ট করে দেয়।

ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার জানান, গত বছর করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। ওইসময়  স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্যপণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে বিক্রি সচল রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও  অনলাইনে নিরাপদে পণ্য ও সেবা সচল রাখার ব্যাপারে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। মূলত এসব কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছে। ফলে প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ডাইরেক্ট ফ্রেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক এসএম শাহনেওয়াজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনাকালীন সময়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। কয়েক গুণ বেড়েছে ডেলিভারির সংখ্যা। অনলাইন কেনাকাটায় গ্রাহকরা এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। ফলে আমাদের ব্যবসাটাও ভালো যাচ্ছে।

এস এম শাহনেওয়াজ বলেন, গত বছর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর থেকে অনলাইন কেনাকাটা বেড়ে যায়। কিন্তু সেভাবে প্রস্তুতি না থাকায় গ্রাহকদের শতভাগ সেবা দিতে পারিনি আমরা। এবার আমাদের শুরু থেকেই প্রস্তুতি ছিল। শতভাগ মানসম্মত সেবা নিয়েই আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

একে/এসকেডি