শপিংমল ও দোকানে ভিড় করা করোনা ক্রয় করার সামিল
ঈদের বাজার করতে শপিংমল ও দোকানে ভিড় করা পরিবারের জন্য করোনা কিনে আনার মতো বিপর্যয় হবে বলে মন্তব্য করেছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ক্যাব বলছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ যখন ক্রমাগত বাড়ছে, সরকার জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ২ সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করলেও ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে ২৫ এপ্রিল থেকে শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার অনুমতি দেয়। ব্যবসায়ীরা মাস্ক ব্যবহার, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শপিংমল খোলা ও দোকানপাট চালু করলেও প্রথমদিনই তাদের সেই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন নেই। উল্টো ‘রমজানে একমাস ব্যবসা করব, পুরো বছর বসে থাকব’ ব্যবসায়ীদের এমন শ্লোগানকে সফল করতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কিন্তু ঈদের বাজার করতে মৃত্যুপুরী শপিংমল ও দোকানে ভিড় করা পরিবারের জন্য করোনা কিনে আনার মতো বিপর্যয় হবে।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতারা বলেন, করোনা যেহেতু ছোঁয়াচে এবং সংক্রমণ বাড়ার উৎসগুলোর মধ্যে গণপরিবহন, শপিংমল ও মসজিদসহ জনসমাগমকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেহেতু নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচার জন্য এসব ঘটনা এড়িয়ে চলার বিকল্প নেই। ব্যবসায়ীদের জীবিকা বাঁচানোর জন্য আপনি যদি বেঁচে থাকেন তাহলে পরে সেটা করতে পারবেন। কিন্তু জেনেশুনে নিজ ও পরিবারের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনা বুদ্ধিমানের পরিচয় হবে না।
বিজ্ঞাপন
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অক্সিজেনের জন্য ভারতজুড়ে হাহাকার এবং মৃত্যুর মিছিল। সোশ্যাল মিডিয়া ও টিভি, পত্র-পত্রিকার কল্যাণে আমরা এসব সংবাদ শুনলেও আমলে না নেওয়ার পরিণতি ভারতের মতো হবে। করোনার রোগী শনাক্ত ও চিহ্নিত করা কঠিন। যে পরিবারের একজন আক্রান্ত হয়েছে শুধুমাত্র সেই পরিবারের আহাজারি ও অবর্ণনীয় দুঃখকষ্ট শোনার মতো কেউ নেই। করোনায় জীবিকা বাঁচাতে গিয়ে অনেক পরিবার চিকিৎসা ও ওষুধের খরচ যোগাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। মানুষ বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যুর প্রহর গুনেছে। তাই নিজেকে সতর্ক করা ছাড়া বিকল্প নেই।
নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণপরিবহন মালিকরা যেভাবে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা বলে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে স্বাস্থ্যবিধি ও অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করেনি। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দায়সারা ফটোসেশনের অভিযান পরিচালনা করেছেন, একইভাবে ব্যবসায়ীদের শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রশাসন কার্যকর উদ্যোগ নেবেন সে আশা কতটুকু পূরণ হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই নাগরিক হিসাবে করোনা থেকে নিজ ও পরিবারের সদস্যদেরকে বাঁচাতে নিজের সতর্কতা ও নিরাপত্তা নিজেকে নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।
আরএম/জেডএস