বাজারে চালের ছবি

বেসরকারিভাবে চাল আমদানির দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছে সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্য আমদানি করতে হলে ১৩টি তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে আমদানিকারককে। আবেদনটি জমা দিতে হবে  খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর।

চলতি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত এ আবেদন করা যাবে। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করার পর খাদ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেবে চাল আমদানির।

ফরমে যেসব তথ্য দিতে হবে

নাম/প্রতিষ্ঠানের নাম (আমদানি নিবন্ধন সনদপত্র অনুযায়ী), আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী/ব্যবস্থাপনা পরিচালক/ব্যবস্থাপনা অংশীদারের নাম, প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ ঠিকানা, ২০২১-২১ অর্থবছরের নবায়ন করা ট্রেড লাইসেন্স নম্বর (সত্যায়িত ফটোকপিসহ), ফুড গ্রেইন লাইসেন্স নম্বর (সত্যায়িত ফটোকপিসহ), আমদানি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নম্বর, আয়কর দাতা হিসেবে টিন/ইটিন নম্বর, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর, মনোনীত ব্যাংকের নাম ও শাখা, লেনদেনকারী ব্যাংক ইস্যু করা অব্যবহৃত/অবশিষ্ট এলসি লিমিটের পরিমাণ, সম্ভাব্য রপ্তানিকারক দেশের নাম (যদি থাকে), রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা (যদি থাকে), আগে চাল আমদানির পরিমাণ ও বিল অব এন্ট্রি নম্বর (সত্যায়িত ফটোকপিসহ)।

গত রোববার (২৭ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে (অনলাইনে) খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বেসরকারিভাবে চাল আমদানিতে শুল্ক ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের তথ্য জানান।

এ সময়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বেসরকারিভাবে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন। বৈধ আমদানিকারকরা বেসরকারিভাবে চাল আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রসহ আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবেন।

তিনি জানান, পরে একটি নীতিমালার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল আমদানির অনুমতি দেবে। নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। সরকারিভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি ও জিটুজি পদ্ধতিতে চার লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।

গত বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। মিল মালিকরা খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি করেও চালের বাড়তি দরের কারণে অনেকেই গুদামে চাল দেননি। সেইসঙ্গে করোনা মহামারি ও চার দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণের কারণে সরকারের মজুদ করা চালও দ্রুত কমছে। সরকারের মজুদ খাদ্যের পরিমাণ কমায় এর সুযোগ নিচ্ছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সরকারের গুদামে সাত দশমিক ৮৮ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চাল পাঁচ দশমিক ৫৬ লাখ টন ও গম দুই দশমিক ৩৩ লাখ টন। অথচ মাত্র এক মাস আগে গত ৫ নভেম্বর খাদ্যশস্যের মজুত ছিল ১০ লাখ তিন হাজার ২০ টন। অর্থাৎ এক মাস ৯ দিনের ব্যবধানে মজুদ থেকে দুই লাখ ১৫ হাজার ২০ টন খাদ্যশস্য কমেছে।

গত বছর এই সময়ে সরকারের গুদামে খাদ্যশস্যের মোট মজুদ ছিল ১৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪০ টন। এর মধ্যে চাল ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩০ টন এবং গম তিন লাখ ৫৮ হাজার ১১০ টন। এই হিসাবে গত প্রায় এক বছরের ব্যবধানে সরকারের গুদামে খাদ্যশস্যের মজুদ কমেছে ৮ লাখ ৮ হাজার ৮৪০ টন।


একে/জেডএস