ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে দেশের পোশাক কোম্পানি লুবনান ট্রেড কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। ভ্যাট, জরিমানা ও সুদসহ মোট ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ফাঁকির অভিযোগে আজ (মঙ্গলবার) এ মামলা দায়ের হয়েছে।   

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের একটি টিম রাজধানীর গুলশানে লুবনান ট্রেড কনসোর্টিয়াম লিমিটেডে গত ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালায়। যেখানে দেখা যায় যে, ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে নানা ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, যা ভ্যাট আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব অনিয়মের মধ্যে রয়েছে মাসিক রিটার্নে অসত্য তথ্য প্রদান করা এবং ভুয়া ভ্যাট চালান ইস্যু করা। এসব অনিয়ম ও ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ এনে আজ এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা করেছে। 

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, একজন গ্রাহকের সুনির্দিষ্ট ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির কারখানা এবং অফিসে অভিযান চালায়। প্রতিষ্ঠানটির মূলত তিনটি ব্র্যান্ড হলো- রিচম্যান আ্যাপারেলস, ইনফিনিটি মেগা মল ও লুবনান এথনিক ওয়্যার। রাজধানীর বড় বড় শপিংমলসহ সারা দেশে ১০৮টি বিপণী কেন্দ্র রয়েছে তাদের। 

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের একটি টিমের অভিযান

অভিযানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি করে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মোট ১০৮টি শাখার জমাকৃত মূসকের সারসংক্ষেপের হিসাব (রিটার্ন অনুযায়ী), বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র, সিএ ফার্মের অডিট রিপোর্ট, করপোরেট চালানের কপি ও আমদানি এলসিগুলোর তথ্যসহ আনুষঙ্গিক বাণিজ্যিক দলিল জব্দ করা হয়। একইসাথে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য দফতর থেকে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত দলিল সংগ্রহ করা হয়। তদন্ত শেষে ভ্যাট গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠানটির মূসক ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে।

তদন্তে দেখা যায়, বিক্রয়মূল্যের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি ৩৯ কোটি ৮২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬৭ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ৪১ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৫ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৮ টাকার ফাঁকি উদঘাটিত হয়।  

অন্যদিকে তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ লাখ ১৩ হাজার ৭১২ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এছাড়া উৎসে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৭১৫ টাকার ফাঁকি উদঘাটিত হয়।  

তদন্তে বিভিন্ন মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির মোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫৪ টাকা। এতে জরিমানা-সুদ ১ কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৭ টাকা। সব মিলিয়ে মোট ৪ কোটি ৬০ লাখ ৯ হাজার ৪৪২ টাকা ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। 

আরএম/এনএফ