১০ দেশের ২২৭ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রথমবারের তিনদিন ব্যাপী অনলাইনভিত্তিক বিটুবি সম্মেলন ‘বিজনেস কনক্লেভ-২০২১’ শুরু হয়েছে। 

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ‘বিজনেস কনক্লেভ ২০২১’-এ বাংলাদেশসহ ১০ দেশের উদ্যোক্তারা ১৭৬ বিটুবি ম্যাচ-ম্যাকিংয়ে অংশগ্রহণ করবে। যেখানে অ্যাপারেল ও টেক্সটাইল, হালকা প্রকৌশল, ঔষধ, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রভৃতি খাত প্রাধান্য পাবে।  

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিজনেস কনক্লেভ উদ্ধোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একেম আব্দুল মোমেন। যেখানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।

আব্দুল মোমেন বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ‘ডিসিসিআই বিজনসে কনক্লেভ ২০২১’ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল ছিল। বর্তমান সরকার দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সম্প্রসারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ে একটি নতুন শাখা স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে এ ধরনের কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘ডিসিসিআই বিজনেস কনক্লেভ-২০২১’-এ অংশগ্রহণকারী বিদেশি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সম্পৃক্ত থাকবেন আশা করছি। এ আয়োজন অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে। একই সাথে দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনা মাহামারিতে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যেখানে স্থানীয় বাজারে চাহিদা ও রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনা পরিস্থিতিতেও দেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৩.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের মানদণ্ড বিচারের যে প্রক্রিয়া রয়েছে, তাতে বাংলাদেশ ঠিক পথেই আছে।

তিনি বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়া ও কৃষিজাত পণ্য, পাটপণ্য, সিরামিক, জাহাজ নির্মাণ শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। আলোচনায় অংশগ্রহণ নেওয়া বিদেশি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের এসব খাতে বিনিয়োগ করবে বলে আমি মনে করি।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআইর সদ্য সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, করোনা মহামারির কারণে তথ্য-প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা গ্রহণের জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে তিনি দেশের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের আহ্বান জানান।

বিজনেস ইনিশিয়েটিভ ফর লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)-এর চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান বলেন, করোনা মাহামারি আমাদের সবার ব্যক্তিগত জীবন ও বৈশ্বিক অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

ডিসিসিআই সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, মনোয়ার হোসেন ও ৩৪ জন দেশি-বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারসহ ১০ দেশের প্রায় ২০০ জন উদ্যোক্তা অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যোগদান করেন।    

আরএম/ওএফ