স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরও ২ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে মোবাইল, ল্যাপটপ ও ট্যাবসহ যন্ত্রাংশ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা জানান।

বাটেজ বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ব্যবহৃত মোবাইলের সিংহভাগই এ দেশে উৎপাদন ও সংযোজন হয়ে থাকে। সে কারণে স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল ও তথ্য-প্রযুক্তি খাত সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা ২ বছরের জন্য বর্ধিতকরণের প্রস্তাব পেশ করছি। 

ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাবের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রিন্টার, টোনার কার্টিজ/ইনকজেট কার্টিজ, কম্পিউটার প্রিন্টারের যন্ত্রাংশ, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, AIO, ডেস্কটপ, নোটবুক, নোটপ্যাড, ট্যাব, সার্ভার, কিবোর্ড, মাউস, বারকোড/কিউআর স্ক্যানার, র‍্যাম, পিসিবিএ/ মাদারবোর্ড, পাওয়ার ব্যাংক, রাউটার, নেটওয়ার্ক সুইচ, মডেম, নেটওয়ার্ক ডিভাইস/হাব, স্পিকার, সাউন্ড সিস্টেম, ইয়ারফোন, হেডফোন, এসএসডি/পোর্টেবল এসএসডি, হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ, পেনড্রাইভ, মাইক্রো এসডি কার্ড, ফ্লাশ মেমরি কার্ড, সিসিটিভি মনিটর, প্রজেক্টর, ইরাইটিং প্যাড, ইউএসবি ক্যাবল, ডাটা ক্যাবল, ডিজিটাল ওয়াচ, বিভিন্ন ধরণের লোডেড পিসিবির (Loaded PCB) স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা পাবে দুই বছর।

নতুন অর্থবছরে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট হতে যাচ্ছে ৫০তম এ বাজেট। আলোচিত এই বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (বাজেট) অধিবেশনে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন হচ্ছে। করোনাকালের দ্বিতীয় এই বাজেট অধিবেশন হচ্ছে সংক্ষিপ্ত পরিসরে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রীদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড হাছান মাহমুদ প্রমুখ।‌

এর আগে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনে দুপুর ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার ওই বিশেষ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাজেটে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর দেন। 

বাজেট প্রসঙ্গে সম্প্রতি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, দেশের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়েই ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট দেওয়া হবে। এ বাজেটে সবার স্বার্থ সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষকে সঙ্গে রাখা হবে। আগামী বছর একই ধারা থাকবে।

জেইউ/এইচকে