বিড়ির ওপর বৃদ্ধি করা ৪ টাকা মূল্যস্তর কমানো, নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধিসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। 

রোববার (৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানান ফেডারেশনের সভাপতি এম. কে. বাঙ্গালী।

ফেডারেশনের অন্য দাবিগুলো হলো— বিড়ির ওপর আরোপিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর কমানো, নকল বিড়ি বন্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কঠোর ভূমিকা রাখা এবং বিড়ি শিল্পকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র থেকে বিরত রাখা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এম. কে. বাঙ্গালী বলেন, বিড়ির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হলো নিম্নস্তরের সিগারেট। বাজারে বিক্রি হওয়া সিগারেটের প্রায় ৭২ শতাংশ নিম্নস্তরের সিগারেট। এসব নিম্নস্তরের সিগারেটের সিংহভাগই ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দখলে। অথচ সেই নিম্নস্তরের সিগারেটের ওপর কোনো শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়নি। ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে আমরা এ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। গত অর্থবছরে বিড়ির প্রতি প্যাকেটে ৪ টাকা মূল্যস্তর বৃদ্ধি করা হয়েছিল আর নিম্নস্তরের সিগারেটে বৃদ্ধি করা হয়েছিল মাত্র ২ টাকা। এতে গত অর্থবছরের বাজেটেই বিড়ি শিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছে। এবছর বাজেটে যদি নিম্নস্তরের সিগারেটে মূল্যস্তর বৃদ্ধি না করা হয় তাহলে বিড়ি শিল্পের অস্তিত্ব চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। ফলে একদিকে সিগারেট কোম্পানিগুলো একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ পাবে, অন্যদিকে সরকার নিম্নস্তরের সিগারেট থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর বাজেটে বিদেশি সিগারেটের প্রতি আনুকূল্য দেখানো হয়ে থাকে। দেশীয় বিড়ি শিল্পের ওপর বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। সরকার ধূমপান কমিয়ে আনতে তামাকজাত পণ্যের ওপর মাত্রাতিরিক্ত করারোপ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলেও বলা হয়েছে, বাজারে যে ব্র্যান্ডের ভোক্তা বেশি তাতে ৭০ শতাংশ করারোপ হওয়া উচিত। অথচ বাজারে ৭২ শতাংশ দখল হওয়া নিম্নস্তরের সিগারেটে মাত্র ৫৭ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে। ফলে মুখে ধূমপান বন্ধের নাম করে সিগারেটকে একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। এতে আমরা নিদারুণভাবে মর্মাহত।

এম. কে. বাঙ্গালী বলেন, বিড়ি শিল্পের সঙ্গে লাখো শ্রমিক জড়িত। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে অসহায় বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, শারীরিক বিকলঙ্গ, নদী ভাঙ্গন ও চর এলাকার মানুষ বিড়ি শিল্পে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বিড়ি কারখানায় কাজ করে তারা পরিবারের মুখে অন্ন যোগান দেয়। শ্রমিকদের জীবন জীবিকার একমাত্র কর্মসংস্থান বিড়ি কারখানা ধ্বংস হলে অনাহারে অর্ধাহারে মারা যাবে বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত কর্মজীবী মানুষ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক মো. হারিক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত লাভলু, প্রচার সম্পাদক মো. শামীম ইসলাম প্রমুখ।

এমএইচএন/এনএফ