দাম কমে সপ্তাহ পার হতে না হতেই আবার বেড়েছে মুরগির দাম। এবার কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বৃষ্টি ও সরবরাহ সংকটের অজুহাতে ডিম ও সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। তবে একটু স্বস্তির খবর হচ্ছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম কিছুটা কমেছে।

রোববার (১৩ জুন) রাজধানীর রামপুরা এবং মালিবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা কেজি দরে। অথচ তিনদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও পাকিস্তানি ককগুলো আগের দামেই অর্থাৎ ২২০-২৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সোনালী মুরগিও বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজিতে। আর ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগি।

মালিবাগ কাঁচাবাজারে মুরগি কিনতে আসা মারুফা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ ছুটির দিন। সপ্তাহের এই দিনটি বাসায় থাকি। একদিন একটু মাংস খাই, এই মাংসের দামও বাড়ছে। তিনি বলেন, দুই ছেলেসহ আমাদের চারজনের পরিবার। গত সপ্তাহে ১৪০ টাকা কেজি মুরগি কিনেছি। আজকে সেই হিসাব করে দুই কেজি মুরগি নিতে আসছি। এখন দেখি মাংস ১৫০ টাকার নিচে দিচ্ছে না। কী করবেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে দুই কেজির জায়গায় একটু কম নেবো।

মুরগি ব্যবসায়ী রুকন উদ্দিন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহে দাম একটু কমেছিল, এখন আবার বেড়েছে। আজ ১৪৫ টাকা কেজি কেনা পড়েছে। আমি ১৫০ টাকা বিক্রি করছি। কয় টাকা লাভ হয় বলেন। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে মুরগির সংকট পড়েছে, তাই দাম বাড়তি।

মুরগির দাম বাড়লেও গরুর মাংস ৫৮০-৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বাজারগুলোতে। এছাড়াও ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৭ টাকা হালি দরে। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল-ডাল, আটা-ময়দাও।

মুরগির মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজিও। বৃষ্টির অজুহাতে করলা, উস্তা, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। শসা, বেগুন, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, ধুন্দুল, বরবটি, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে। এছাড়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে। পেঁপে, পটল, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে। জালি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। লাউও বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।

শাকের মধ্যে দশ টাকার কমে কোনো আঁটি বিক্রি হচ্ছে না। পুঁইশাক, লাউশাক, পাটশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা আঁটিতে। তবে তিনটি নিলে বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কমে ২৫ টাকায়। ডাটা বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা আঁটিতে।

মাছের মধ্যে বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪শ থেকে ১৬শ টাকা দরে। ৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকা দরে। বড় চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৯শ টাকা কেজিতে। গলদা চিংড়ি ৭শ থেকে ৮শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি রুই মাছ ২০০-২৫০ টাকায়, কাতল ২৮০-৩২০ টাকায়, পাঙাশ ১২০-১৭০ টাকা, পাবদা ৫০০-৫৫০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা এবং বড় তেলাপিয়া মাছ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪৫ টাকা কেজিতে। এর মধ্যে বৃষ্টিতে ভেজা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজিতে। এগুলোর বেশিরভাগই আমদানি করা। দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে।

রসুনের মধ্যে ছোট দানার দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। আর ভারতীয় মোটা দানার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে। ডালের মধ্যে ভালো মানের মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা কেজিতে। আর ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মধ্যম মানের মসুর ডাল।

এমআই/এনএফ