বিজ্ঞাপনী সংস্থা মেলোনেডস

প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে মেলোনেডস নামের বিজ্ঞাপনী সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় ৪.৯২ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় আজ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, বিজ্ঞাপনী সংস্থা মেলোনেডসের গুলশান অফিসে ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সময়কালের কার্যক্রম তদন্ত করে। প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা বার্ষিক অডিট প্রতিবেদন, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানের জমা করা ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিল থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আড়াআড়ি যাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সেবা খাতের বিপরীতে উৎসে মূসক বাবদ (তদন্ত মেয়াদে) মাত্র ৬৯৭ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত তথ্য গোপন করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সেবা বিক্রির ওপর ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৭ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু তদন্তে উদঘাটিত হয় যে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রির ওপর প্রযোজ্য ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭২০ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ৯৩ টাকা ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।

এছাড়া উল্লেখিত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকার ফাঁকি উদঘাটিত হয়। সব মিলিয়ে অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৪৪১ টাকা এবং ২ শতাংশ হারে সুদ বাবদ ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ১৮৭ টাকাসহ মোট ৪ কোটি ৯১ লাখ ৯৪ হাজার ৬২৮ টাকা ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়।

তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানটিকে আত্মপক্ষ সমর্থনে একাধিকবার পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তাদের বক্তব্য আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। তদন্তে উদঘাটিত পরিহার করা ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদনটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভ্যাট গোয়েন্দারা।

আরএম/এসএসএইচ/জেএস