ঋণের ১৩০০ কোটি টাকা পুনরুদ্ধারে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে সময় চেয়েছেন এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে দুদক উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের কাছে সময় চেয়ে মৌখিক আবেদন করেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথম পর্যায়ে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল শাহরিয়ার ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল হক গাজী দুদকে হাজির হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এম. এ হাফিজ, মো. আবুল শাহজাহান ও অরুণ কুমার কুণ্ডুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত দুদকের  জিজ্ঞাসাবাদে তারা দায় এড়াতে বিভিন্ন অজুহাত উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির এমডি রাসেল শাহরিয়ার জিজ্ঞাসাবাদকালে অনেক প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিতে পারেননি। তবে অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে দুদকের কাছে সময় চেয়ে বলেন আমাকে সময় দেন, আমি ঋণের টাকা পুনরুদ্ধার করব।

যদিও দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান সাবেক এমডিসহ এফএএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।দুদক সূত্রে জানা যায়, ঋণ আবেদন গ্রহণ করেই যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোনো মর্টগেজ গ্রহণ ব্যতিরেকে প্রায় ২০টি কাগুজে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানকে ১৩০০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন পরিচালনা পর্ষদসহ সংশ্লিষ্টরা। 

কাগুজে প্রতিষ্ঠান হলো : এস, এ এন্টারপ্রাইজ, মুন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, সুখাদা প্রোপার্টিজ লিমিটেড, ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ, আরবি এন্টারপ্রাইজ, দিয়া শিপিং লিমিটেড, নিউটেক এন্টারপ্রাইজ, নিউট্রিক্যাল লিমিটেড, মেসার্স বর্ণ, কণিকা এন্টারপ্রাইজ, দ্রিনান এ্যাপারেলস, অ্যান্ড বি এন্টারপ্রাইজ, এমার এন্টারপ্রাইজ , জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজ , তামিম অ্যান্ড তালহা, হাল ইন্টারন্যাশনাল, মেরিন ট্রাস্ট লিমিটেড, আর্থস্কোপ এবং এমটিবি মেরিন ।

এ বিষয়ে দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ঋণের নামে অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে অনুসন্ধান কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদে আত্মসাতের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলছে।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক কাজী মাহজাবিন মমতাজ, মাহফুজা রহমান বেবী, সোমা ঘোষ, ডা. উদ্দাব মল্লিক এবং মো. আতারুল ইসলামকে তলব করা হলেও তারা হাজির হননি।

একই অভিযোগে সোমবার এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের মোট ১২ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। গত ৮ আগস্ট এফএএস ফাইন্যান্সের শীর্ষ ২৬ কর্মকর্তা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চারজনসহ মোট ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।

অভিযোগ রয়েছে, আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ও তার সহযোগীদের যোগসাজশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্স থেকে লুটপাট হয় দুই হাজার কোটি টাকা। শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে ৩০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মর্টগেজ ছাড়াই ঋণ নিয়ে এ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে।

আরএম/এসকেডি