করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত ‘টাকা জাদুঘর’। সম্প্রতি সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে এ জাদুঘর।

মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে জাদুঘরটি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীরা জাদুঘরে প্রবেশ করতে পারবেন। 

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়লে গত এপ্রিলে টাকা জাদুঘরের প্রদর্শনী বন্ধ করা হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য পুনরায় উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মাে, রজব আলী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক টাকা জাদুঘরের গ্যালারি দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

শনিবার থেকে বুধবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা এবং শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টাকা জাদুঘর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে বৃহস্পতিবার।

রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বর সেকশনের বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেনিং একাডেমির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে টাকা জাদুঘর। এটি প্রতিষ্ঠা হয় ২০১৩ সালে। দুটি গ্যালারি দিয়ে সাজানো হয়েছে জাদুঘরটি। কোনো প্রকারের প্রবেশমূল্য ছাড়াই টাকা জাদুঘর ঘুরে দেখা যায়।

প্রাচীন বাংলা থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ধাতব মুদ্রা এবং কাগুজে নোট সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এ জাদুঘরে। সেই সঙ্গে এখানে রয়েছে মুদ্রা সংরক্ষণের প্রাচীন কাঠের বাক্স ও লোহার সিন্দুক। আরও রয়েছে ভারতে মোঘল শাসনের সমাপ্তির পর ১৮৩৫ সাল থেকে প্রচলিত ব্রিটিশ-ভারতীয় মুদ্রা।

জাদুঘরের বিশেষ আকর্ষণ বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের কাগজের নোট, পলিমার, হাইব্রিড নোট ও ধাতব মুদ্রা। এখানে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, সাবেক চেকোস্লোভাকিয়া, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী জাপানি ডলার, ইতালি, সাবেক বিভক্ত জার্মানি, আফগানিস্তান, চীন, ল্যাতিন আমেরিকা, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, ভিয়েতনাম এবং কমিউনিস্ট আমলের পোল্যান্ডের নোট রয়েছে।

জাদুঘরের গ্যালারিতে পোড়ামাটির ম্যুরালের মাধ্যমে প্রাচীন থেকে শুরু করে আধুনিককাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিবর্তনের ধারাও বর্ণিত হয়েছে।

প্রযুক্তির ব্যবহারও রয়েছে এই জাদুঘরে। প্রদর্শিত যেসব মুদ্রা তার সাথে রয়েছে একটি করে নম্বর। এই নম্বর নিয়ে যে কেউ আধুনিক ফটো কিয়স্কে গিয়ে ওই মুদ্রাটির ইতিবৃত্ত জানতে পারবে। অডিওর মাধ্যমে ইচ্ছুক দর্শনার্থীরা শুনতে পাবেন বিভিন্ন মুদ্রার সৃষ্টির ইতিহাস।

এসআই/এসকেডি