করোনার মধ্যেও বেড়েছে আমদানি ব্যয়। তবে সে অনুযায়ী রফতানি ও রে‌মিট্যান্স আয় বা‌ড়ে‌নি। যার প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যে। বাড়ছে ঘাটতির পরিমাণ।

চল‌তি ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথম দুই মা‌সে (জুলাই-আগস্ট) ৪১১ কোটি ৬০ লাখ ডলার বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশীয় মুদ্রায় ঘাটতির এ পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্যে পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৬৭৩ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে এক হাজার ৮৪ কোটি ডলার।

এ সময়ে পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ তার আগের বছরের তুলনায় দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কম আয় করেছে। বিপরীতে পণ্য আমদানির ব্যয় আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। রেমিট্যান্স ক‌মে‌ছে ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সেবা খাতের ঘাটতি ৪৩ কো‌টি ৩০ লাখ ডলার

বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাণ করা হয়। করোনাকালীন সময়ে মানুষ ভ্রমণ কম করেছে।

এফডিআই বে‌ড়ে‌ছে ১২ শতাংশ

মহামারির মধ্যেও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) বেড়েছে। চল‌তি অর্থবছ‌রের দুই মা‌সে ৫৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছে বাংলাদেশ। তার আগের অর্থবছরে যা ছিল ৫১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

দেশের বিভিন্ন খাতে সরাসরি মোট যে বিদেশি বিনিয়োগ আসে তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ নিয়ে যাওয়ার পর যেটা অবশিষ্ট থাকে সেটাকে নিট এফডিআই বলা হয়। আলোচিত সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগও আগের বছরের চেয়ে ৯৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে যা ছিল ১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।

চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) টান

করোনায় বৈশ্বিক অর্থনীতির নাজুক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) টান পড়েছে। চলতি হিসাবে ঘাটতি অর্থ হলো সরকারকে ঋণ নিয়ে চলতি লেনদেনের দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে।

কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্সে ঘাটতি (ঋণাত্মক) দেখা দি‌য়ে‌ছে। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১২৪ কোটি ডলার ঘাটতি রয়েছে।

দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) ঋণাত্মক অবস্থায় হয়েছে। অর্থবছরে প্রথম দুই মা‌সে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নিট) যা এসেছিল তার চেয়ে ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার চলে গেছে। তার আগের অর্থবছরের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

এসআই/ওএফ