জাপানের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের অটোমোটিভ খাতের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

রোববার (১০ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে সংগঠনের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান এ আহ্বান জানিয়েছেন।

এ সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং জাপান দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি শিরাহাতা কাসুমি উপস্থিত ছিলেন।

রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দুদেশের মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৯২১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে আমদানি ও রফতানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে এক হাজার  ৭২০ দশমিক ৭০ এবং এক হাজার ২০০ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। করোনা মহামারিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দাভাবের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে জাপানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৮৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কিছুটা কম, তবে আশা প্রকাশ করেন সামনের দিনগুলোতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরো সম্প্রসারিত হবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ডিসিসিআই ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আগামী ২৬ অক্টোবর সাত দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাঁচটি জাপানি কোম্পানি এতে অংশগ্রহণ করবে। এর মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে জাপানিজ বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অটোমোটিভ খাত জাপানি বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য  জাপানের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বর্তমানে ৩২১টি জাপানিজ কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করছে এবং চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় তিনশ ৯৭ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতের পণ্যই বেশি হারে জাপানে রফতানি করে থাকে। তবে জাপানে বাংলাদেশের অন্যান্য পণ্য রফতানিতে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন।

অন্যদিকে, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি বলেন, করোনা মহামারিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক গতিধারা সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরেছে এবং করোনা টিকা প্রদানে জাপানের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন। আগামী বছরের শেষ নাগাদ ঢাকার অদূরে আড়াই হাজারে ‘জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের কাজ শেষ হলে জাপানি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের চলমান কার্যক্রম সম্পন্ন হলে সার্বিকভাবে বাংলাদেশ বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।

তিনি জানান, জাপানভিত্তিক মোটর কোম্পানি মিতসুবিশি সম্প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের লক্ষ্যে তাদের সম্ভাব্যতা জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে নিজেদের কারখানা স্থাপনে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি। আরো বেশি হারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়নে তিনি বিশেষ করে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, পণ্য আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং ইপিজেড ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ দ্রুততর সময়ে সম্পন্ন করার উপর জোরা দেন।

এ সময় রাষ্ট্রদূত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের অধিকতর সম্প্রসারণে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব করেন।

আরএম/এইচকে