বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) পরিচালনা পরিষদ নির্বাচনে (২০২১-২০২৩) ১৬ পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ২১ সদস্যের কমিটিতে চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত হবেন বাকি ৫ জন। সেখানে নির্বাচনে লড়ছে ১১ জন প্রার্থী।

জানা গেছে, বিজিএপিএমইএ সৃষ্টির পর এই প্রথম সরাসরি নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েছে; শুধুমাত্র চট্টগ্রামের প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য। সংগঠনটির সিনিয়র নেতাদের প্রচেষ্টায় সেখানে প্রার্থীদের মধ্যে আপস করানো সম্ভব হয়নি। আর এই নির্বাচনের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে প্যানেল লিডারের দায়িত্ব পালন করবেন বর্তমান কমিটির দ্বিতীয় সহসভাপতি মোজাহারুল হক শহিদ।
 
বিজিএপিএমইএ সূত্র জানায়, সংগঠনটির সংবিধান অনুযায়ী দুই বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে দুই বছর মেয়াদি ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে। তবে এতদিন নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমেই প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসছিল। সরাসরি নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। এ বছরও ঢাকায় ১৬ জন পরিচালক পদের বিপরীতে ৪২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ত্রুটির কারণে দুটি ফরম বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত বাকি ৪০ জনের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ১৬ জনকে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৬ জন পরিচালক হলেন- বিসমিল্লাহ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর্ণধার মোজাহারুল হক শহিদ, আদজি ট্রিমসের শাহরিয়ার, টোয়াইস পলি ব্যাগ থ্রেড ইন্ডাস্ট্রিজের সালেহ আহমেদ বাবু, সেনজেন মেটাল লিমিটেডের ওমর ফারুক, ইউনিয়ন লেভেলের মো. মনিরুজ্জাম মোল্লা, সানস প্যাকেজিংয়ের একেএম মোস্তফা সেলিম, ক্লাসিক কার্টন লিমিটেডের মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, গোল্ডেন ক্রাউন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের হাসানুল করিম তমিজ, শিমুলিয়া ফ্যাশন ওয়্যারের খান নজরুল ইসলাম হান্নান, এসএনডি স্কয়ার ইন্টারন্যাশনালের মো. সাইফুল ইসলাম সবুজ, নিক্সন বক্স ইন্ডাস্ট্রিজের মো. সুলতানুল ইসলাম তারেক, সেলিনা এ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, আর এসএস থ্রেডের মো. আবদুন নুর, এজেড ট্রিম লিমিটেডের মো. আতিকুর রহমান, প্যারামাউন্ড এ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের মনির উদ্দিন আহমেদ এবং হৃদয় রিফাত ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জহির উদ্দিন আলমগীর।
 
বর্তমানে ১ হাজার ৮শ সদস্যের বিজিএপিএমইএর এই সংগঠনে নির্বাচনের মাধ্যমে ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে একজন সভাপতি এবং একজন প্রথম সহসভাপতি। তিনজন সহসভাপতি আর বাকিরা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন। 

নির্বাচনে প্যানেল লিডারের দায়িত্বে থাকা মোজাহারুল হক শহিদ বলেন, ঢাকায় আলোচনার মাধ্যমে বিনা ভোটে ১৬ জন যোগ্য পরিচালক নির্বাচিত করা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

বিজিএপিএমইএর বর্তমান কমিটির পরিচালক ও ইনডেট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল শাহরিয়ার আহমেদ জানান, আশা করছি পিছিয়ে পড়া এক্সেসরিজ খাতকে এগিয়ে নিতে যোগ্য ও সৎ লোকদের নিয়ে বিজিএপিএমইএর পরিচালনা পরিষদের পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তা নির্বাচিত হবেন। আমরা চাই যারা ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন এবং আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে যারা দায়িত্বে আসবেন তারা এই খাতের অবদান নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরবেন। একইসাথে সরকারের যে সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা আদায় করে নেওয়ার ভূমিকায় কাজ করবেন। নতুন কমিটির কাছে সেই প্রত্যাশাই থাকবে।

বিজিএপিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিজিএপিএমইএর নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক ও নির্বাচনী বোর্ডের দুই সদস্য এম কাওছারুজ্জামান এবং মো. ইসমাইল চৌধুরী বাদল নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী দুই বছর (২০২১-২৩ ) মেয়াদে আগামী ৬ নভেম্বর ঢাকায় ১৬টি পরিচালক পদ এবং চট্টগ্রামে ৫টি মিলিয়ে মোট ২১টি পরিচালক পদের নির্বাচন। এজন্য নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৪ অক্টোবর, ওই দিনই মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। এছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ ছিল। কিন্তু ঢাকায় ১৬ জন বেশি পরিচালক পদে প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবাই নির্বাচিত হয়েছেন। তবে নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে ৫ পরিচালক পদে নির্বাচন হবে।  

পরিচালক নির্বাচন শেষে সভাপতিসহ ৫টি শীর্ষ কর্মকর্তা পদে আগামী ৮ নভেম্বর নির্বাচিত পরিচালকদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামী ১৪ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।

এর আগে বিজিএপিএমইএ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির একাধিক সদস্যের অভিযোগ ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে’ নতুন ভোটার তালিকায় অনেককে যুক্ত করা হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন বলেন, অযোগ্য কাউকে ভোটার করা হয়নি। এ বিষয়ে কারো অভিযোগ থাকলে আপিল বিভাগকে লিখিত জানানোর সুযোগ আছে। এমন কোনো তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআই/এইচকে