বাংলায় আয়কর আইনের খসড়া করদাতা ও বিভিন্ন অংশীজনের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতোমধ্যে খসড়া আইনটি এনবিআরের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।  আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত আইন বিষয়ে পরামর্শ ও মতামত দেওয়া যাবে।

খসড়াটি চূড়ান্তভাবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের পূর্বে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও সভা অনুষ্ঠান করবে এনবিআর। মতামত ও পরামর্শ পর্যালোচনা শেষে আগামী ৩০ নভেম্বর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খসড়া আইনটি উপস্থাপন করা হবে।

রোববার এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন ঢাকা পোস্টকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, আইনটি বাংলা ভাষায় আয়কর আইন-২০২২ নামে পরিচিত হবে। খসড়া আয়কর আইনের ১৪টি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আটটি লক্ষ্য পূরণে খসড়া আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। 

লক্ষ্যগুলো হলো, দেশে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বেগবান এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, স্বচ্ছ ও জবাদিহিতামূলক কর প্রশাসন নিশ্চিত করা, রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চাকে সন্নিবেশিত করা, ই-কর ব্যবস্থাপনা চালু করা, করদাতাবান্ধব ও সহজ ভাষায় আইন প্রণয়ন করা, আইনের বিধানাবলির বিষয়ভিত্তিক সুবিন্যাস করা, অস্পষ্টতা দূর করা এবং কর পরিপালন সহজ করা।  

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, উপমহাদেশে আয়কর আরোপ, আদায় এবং সংগ্রহের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ১৯২২ সালের আয়কর আইনের অধীনে সম্পাদিত হতো। ১৯৪৭ সালে ও ১৯৭১ সালেও পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশেও ওই আইন অনুসরণ করা হয়। ১৯৮৪ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে আয়কর আইন-১৯৮৪ আইনি কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যদিও আইনটি ইংরেজি ভাষা ও ভাষার স্টাইল সাধারণ জনগণের কাছে সহজবোধ্য না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহল থেকে আইনটি বাংলায় প্রণয়নের দাবি ওঠে।

সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী মামলার রায়ে সব অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তরের নির্দেশনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর বাংলা ভাষায় আয়কর আইন-২০২২ এর একটি খসড়া প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়।  

আরএম/আরএইচ