ঢাকা উড়াল সড়ক (ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণে গৃহীত বৈদেশিক ঋণের উৎসে আয়কর মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ( এনবিআর)। প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেডকে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সই করা প্রজ্ঞাপনে ওই কর মওকুফ করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে সোমবার (১ নভেম্বর) এনবিআর পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন জানিয়েছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে (এফডিইই) বৈদেশিক ঋণের সুদের ওপর প্রযোজ্য উৎসে আয়কর হতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। এই অব্যাহতি সুবিধা চুক্তিতে উল্লেখিত ঋণের মেয়াদের সময়সীমা পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ ইউএসডি টার্ম ফ্যাসিলিটি এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী দ্য এক্সপোর্ট ব্যাংক অব চায়না এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না হতে এফডিইই এ ঋণ নেয় বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সেতু বিভাগ। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পর্যালোচনা অনুসারে তিন হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল মূল প্রকল্পে।

২০১১ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ব্যয় বেড়ে তা দাঁড়ায় চার হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পে যুক্ত হয় নতুন সংযোগপথ।

প্রায় ১০ বছরে প্রকল্পের প্রধান অংশ কাওলা-বনানী ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার অংশে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রগতি ৫৬ শতাংশ। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিমানবন্দর থেকে বনানী অংশে নির্মাণকাজের অগ্রগতি ছিল ৫০ শতাংশ। 

প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপ বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। তৃতীয় ধাপ মগবাজার লেভেল ক্রসিং থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। ২০১১ সাল থেকে আট বছরে পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল মাত্র ২২ শতাংশ।

চার লেনের উড়াল সড়কটির প্রারম্ভিক স্থান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে কাওলায়। কাওলা থেকে শুরু হয়ে খিলক্ষেত, কুড়িল, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে কুতুবখালি পর্যন্ত যাবে এটি। ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে উড়াল সড়কটি।

এতে থাকছে ওঠা-নামার জন্য ৩১টি র‍্যাম্প। এগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ২৭ কিলোমিটার। এসব সংযোগপথ বা র‍্যাম্পসহ উড়ালসড়ক হবে ৪৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার।

আরএম/এইচকে