বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির দুই দিনব্যাপী ২১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার। রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সমিতির ইস্কাটনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অর্থনীতি সমিতির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রভাব অভিঘাত ও মানব উন্নয়ন’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক থাকবেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘দেশে অবকাঠামোগত অনেক কর্মকাণ্ড চলছে। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের শ্রেণি কাঠামোয় ব্যাপক যে পরিবর্তন ঘটছে। বিপজ্জনকভাবে যে বৈষম্য ও বহুমাত্রিক দারিদ্র্য বাড়ছে―তা সমাধানে সরকারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে মুষ্টিমেয় ব্যক্তির কাছে অগাধ টাকা ও সম্পদের পাহাড় গড়ে উঠছে। অন্যদিকে দরিদ্র মানুষ ক্রমশ দরিদ্রতর হচ্ছে। দরিদ্রদের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের শ্রেণি কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে, শহর থেকে ১ কোটি মানুষ উল্টো অভিবাসনে গ্রামে যেতে বাধ্য হয়েছে, সমাজের সব ক্ষেত্রেই বৈষম্য চরম রূপ নিয়েছে, বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার চরম অবস্থায় পৌঁছে গেছে। কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনানুষ্ঠানিক খাতের দরিদ্র মানুষ তেমন কোনো প্রণোদনা ও সহায়তা পায়নি। পক্ষান্তরে ধনীদের দেওয়া প্রণোদনার অর্থের স্বল্প সুদের মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষ ভীষণ সংকটে রয়েছে। ব্যাংকিং খাতে জবাবদিহি নেই, গণতন্ত্র বিপর্যস্ত, বাক স্বাধীনতা কমে আসছে। এমন অবস্থা ভবিষ্যতে দেশে বড় ধরনের সংকট বয়ে আনতে পারে।’

দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের ১টি বিশেষ প্লেনারি সেশন ও ৮টি কর্ম অধিবেশনসহ সমিতির কার্যনির্বাহক কমিটির সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ‘কোভিড-১৯ থেকে শোভন সমাজ’ শীর্ষক বিশেষ প্লেনারি অধিবেশনটি উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদের সভাপতিত্বে এতে একক বক্তা থাকবেন অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

বিশেষ প্লেনারি সেশন ও কর্ম-অধিবেশনগুলোতে সভাপতি হিসেবে দেশের প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. আবদুল বায়েস, অধ্যাপক ড. শফিক উজ জামান, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং রাষ্ট্রদূত এম. আব্দুল হান্নানের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। সম্মেলনে ৮৪টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। সারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার অর্থনীতিবিদ এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ ও এ জেড এম সালেহসহ কার্যকরী কমিটির সদস্যরা।

আরএম/এসকেডি