পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) চলমান ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ছিল না শিশুদের জন্য বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা। এ নিয়ে ‘শিশুদের বিনোদনের কিছুই নেই বাণিজ্য মেলায়’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে।

প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। মেলা কর্তৃপক্ষ শিশুদের বাড়তি বিনোদনের জন্য আলাদা দুটি জাস্পিং হাউজ চালু করেছে। রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে।

বাণিজ্য মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, হাউজ দুটোর ভেতরে ও বাইরে শিশুরা আনন্দে মেতেছে। ভেতরে কেউ লাফাচ্ছে, নাচানাচি করছে। অনেকে ভেতরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। মেলায় আসা অভিভাবকদের অনেককেই বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। 

রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে মেলায় আসা সুরাইয়া নাজনীন নামে এক নারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার ভয় উপেক্ষা করে বাচ্চাদের মেলায় নিয়ে এসেছি। নিজের জন্য, বাচ্চাদের জন্য বেশ কিছু কেনাকাটাও করেছি। পুরো মেলা ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। বাচ্চাদের হাউজে পাঠিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছি। 

জাম্পিং হাউজ কেমন লাগছে- নাজনীনের সন্তান আফিফার কাছে জানতে চাইলে সে বলে, সবাই মিলে নাচানাচি করছি। অনেক অনেক ভালো লাগছে।

রাজধানীর বাসাবো থেকে মেলায় আসা শাহিনুর আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়ে (সুমি) ও ভাতিজিকে (রুহি) নিয়ে আমরা দুজন মেলায় এসেছি। কুড়িলে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এখন সামনে যেতে চাচ্ছে না। তাই তাদের হাউজে পাঠিয়েছি।  

জাম্পিং হাউজ দুটির দায়িত্বে থাকা আনিসুর রহমান সবাইকে জুতা রেখে ভেতরে আসার জন্য অনুরোধ করছিলেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুক্রবার থেকে মেলায় বাচ্চাদের জন্য দুটি জাম্পিং হাউজ খোলা হয়েছে। মেলার শেষ দিন পর্যন্ত এটি চলবে।

ইপিবি সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেলায় আগত শিশুদের জন্য দুটি জাম্পিং হাউজের ব্যবস্থা করেছি। শুক্রবার থেকে এ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। প্রতিদিন শতশত শিশু মেলায় এসে আনন্দ করছে। 

তিনি বলেন, মেলায় আসা শিশুদের জন্য মিনি পার্ক কিংবা বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা দরকার ছিল। আগামীতেও রাখা হবে। এতে শিশুরা মেলায় এসে বেশি করে আনন্দ উপভোগ করতে পারবে। মেলার প্রতি শিশুদেরও আগ্রহ বাড়বে।

পূর্বাচলে প্রথমবারের মতই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাসব্যাপী মেলার প্রথম দুই সপ্তাহে শিশুদের জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এছাড়া মেলায় শিশুদের জন্য ভালো কোনো খেলনার দোকানও নেই। ফলে মেলায় আসা শিশুরা এবং তাদের অভিভাবকরা বেশ হতাশ ছিলেন।

আগারগাঁওয়ের মেলায় শিশুদের জন্য আলাদা পার্ক ছিল। পার্কে রঙিন সাম্পানে বসে মিউজিকের তালে তালে দোল খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। শিশু-কিশোরদের স‌ঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদেরও দোল খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। ঝিকঝিক ট্রেন আর চরকি, নাগরদোলা, হানি সুইং ও দোলনার পাশাপাশি হেলিকপ্টারে আকাশে ওড়ারও ব্যবস্থা ছিল শিশুদের জন্য।

এমআই/আরএইচ