ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ করে ৫০ বিনিয়োগকারীর প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে ফার্স্টলিড সিকিউরিটিজ লিমিটেড। ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করে ফার্স্টলিড সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ১২২ নং সদস্য।

মঙ্গলবার (২৪ মে) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।

বিনিয়োগকারীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন মোহাম্মদ আইয়ুব খান। তিনি বলেন, ফার্স্টলিড সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাদের ঢাকা অফিসের আমাদের প্রায় ৫০ জন বিনিয়োগকারীর সব শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এই বিনিয়োগকারী বলেন, ফার্স্টলিড সিকিউরিটিজ থেকে শেয়ার বিক্রি সংক্রান্ত কোনো এসএসএস এবং মেইল আমরা কখনো পেতাম না। বিষয়টি তাদের জানানো হলে তারা সব ঠিক হয়ে যাবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি, বাধ্য হয়ে আমরা অন্য হাউজে বিও হিসাব খুলে শেয়ার হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেই, সেটাও হয়নি। পরে জানতে পারি ২০২১ সালের মার্চ থেকে ফার্স্টলিড সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধ করে রেখেছে বিএসইসি।

মোহাম্মদ আইয়ুব খান বলেন, হাউজ বন্ধ থাকলেও ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেয়ার লেনদেন করতেন তারা। গত ২০ জানুয়ারি আমরা সিএসইর সিআরও বরাবর শেয়ার হস্তান্তরের আবেদন করি।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ আমাদের কোনো শেয়ার হস্তান্তর করেনি। এরপর আমার বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করলেও কমিশন থেকেও আমরা কোনো সদুত্তর পাইনি। তবে সিডিবিএল থেকে জানানো হয় আমাদের হিসাবে কোনো শেয়ার নেই।

এই বিনিয়োগকারী বলেন, প্রতিষ্ঠানটি আমাদের শেয়ার বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করায় আমরা পথে বসে গেছি। আমরা খুব আর্থিক কষ্টে আছি। এখন আমাদের টাকা-শেয়ার যত দ্রুত সম্ভব ফেরত পেতে আমরা প্রধানমন্ত্রী ও বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানাই।

বিএসইসির চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বিনিয়োগকারীরা বলেন, আমরা সব টাকা হারিয়ে নিঃস্ব। আমাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। শেয়ার বাজারকে বাঁচান, নিঃস্ব বিনিয়োগকারীদের বাঁচান।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন— বিনিয়োগকারী কামরুন্নাহারের স্বামী মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আলী চোকদার, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কৃষ্ণ রায়, কামরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আইনুর প্রমুখ।

এমআই/এসএসএইচ