অগ্রিম আয়কর (এআইটি) তুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এআইটি তুলে দেওয়ার যে দাবি উঠেছে, তা অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন। আগামী বাজেট আলোচনায়, বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা এবং এআইটি তুলে দেওয়ার বিষয়টি সরকারের কাছে তুলে ধরবো।

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটরিয়ামে ‘বাজেট ২০২৩-২৪: প্রেক্ষিত পুঁজিবাজার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সিএমজেএফ ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ উদ্যোগে বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উন্নয়নশীল বিশ্বে পুঁজিবাজার উপেক্ষিত থাকায় বাংলাদেশেও তা হয়েছে মন্তব্য করে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন চালকে পুঁজিবাজার এখনো স্থান নিতে পারেনি। কিন্তু পুঁজিবাজার চালকের নেতৃত্বে আসতে পারে। আমরা সে পথেই রয়েছি। এখানে আমাদের আরেকটু নজরদারি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বাজেটে পুঁজিবাজার কিছুই পায়নি, এ কথাটা আসলে সঠিক নয়।আমরা অর্থনীতির উন্নয়নের পথে রয়েছি। আমাদের দেশে এখনো পুঁজিবাজারকে হয়তো তেমনটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু আস্তে আস্তে এ গুরুত্বটা বাড়বে।

এম এ মান্নান বলেন, দ্বৈত কর নীতি প্রত্যাহার, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান বাড়ানো বিষয়টিও সরকারের কাছে তুলে ধরবো। আপনারা যদি এই প্রস্তাবগুলো লিখিত আকারে পাঠান, তবে সরকারের কাছে আমি বিবেচনার জন্য লিখিত পাঠাবো।

সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান এবং ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে উঠতি বয়সী যুবকের সঙ্গে তুলনা করে এম এ মান্নান বলেন, কোন সন্দেহ নেই, আমাদের অর্থনীতি তরুণ ও টিনেজার অর্থনীতি। টিনেজার হওয়ায় এর একটা উদ্যোম রয়েছে, কিছুটা লাফা লাফিও রয়েছে, তাই এটিকে নজরদারি করতে হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ডমিনেন্ট বা ড্রাইভ দিতে পারে এমন অর্থনীতি আমাদের হয়নি। আমরা সেদিকে যাচ্ছি। উই আর অন দ্য ওয়ে। উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে যেতে হলে প্রয়োজন অর্থের। পুঁজিবাজার সেই অর্থায়নের উৎস হতে পারে। আমরা সেদিকে যাবো, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আমাদের অভিযাত্রা শুরু হবে।

তিনি বলেন, কৈশোরে উপনীতদের যেমন বিশেষ যত্ন নিতে হয়, তেমনি আমাদের বিকাশমান অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারকে চালকের আসনে নিয়ে যেতে যত্ন নিতে হবে। এখানে একটু নজরদারি-তদারকি করা লাগবে।

দেশের অর্থনীতির আগের চেয়ে বেশি তথ্য নির্ভর ও জ্ঞান নির্ভর হচ্ছে। এখন বিজনেস সংগঠনগুলোও আগের চেয়ে বেশি দক্ষ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সর্বক্ষেত্রে সংস্কার করা দরকার তবে আর্থিক খাত হিসেবে ব্যাংক ও এনবিআর এ সংস্কার খুবই জরুরি। আমরা সেখানেও কাজ করবো।

উন্নয়নশীল দেশে পুঁজিবাজার উপেক্ষিত থাকে। এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের বিষয়টি সেভাবে না আসলেও আমি বাজেটে আনার জন্য লিখিত আকারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানাবো। যোগ করেন তিনি।

সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান এবং ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।

এমআই/এসএম