পুঁজিবাজারে ঢালাও দরপতন চলছেই, লেনদেনেও ভাটা
আগের দিনের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (২৯ ডিসেম্বর) দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। উভয় পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় কমেছে মূল্যসূচক। একইসঙ্গে কমেছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের পরিমাণও।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আজ ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান হয়। বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের ১০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এরপরেই বাজারের চিত্র বদলে যায়।
বিজ্ঞাপন
দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ার কারণে লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৬ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনের শেষদিকে কিছু প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসে। এতে সূচকের পতনের মাত্রা কমে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৫টির। আর ৯৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৯১টির দাম কমেছে এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩৫টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ২৭টির দাম কমেছে এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৭টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১০টির দাম কমেছে এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ৯৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫৭ পয়েন্টে নেমে গেছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩০৯ কোটি ৯৬ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৮৫ কোটি ৮ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড়ো ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ১১ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালি পেপারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলহাজ্ব টেক্সটাইল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রহিমা ফুড, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, উত্তরা ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, সায়হান কটন এবং ফাইন ফুডস।
অপর পুঁজিবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৩টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এমএমএইচ/জেডএস