প্রায় এক দশক ধরে মুনাফা করতে না পারায় স্বেচ্ছায় পুঁজিবাজার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেড। ১৯৯৩ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১২ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল। এরপর থেকে কঠিন সময় পার করে আসছিল।

পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যূত হতে ২০২০ সালে স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করেছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি। কমিশন চলতি সপ্তাহে আবেদনটি অনুমোদন করেছে।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, কোম্পানিটি স্বেচ্ছায় তালিকাচ্যূতির জন্য আবেদন করেছিল। তালিকাচ্যূতির সকল প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করায় কমিশন প্রতিষ্ঠানটির তালিকাচ্যূতির আবেদন মঞ্জুর করেছে। নিয়ম অনুসারে কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার নূন্যতম ফেস ভ্যালুতে কিনে নিয়ে বাজার থেকে বের হয়ে যাবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, বর্তমানে বেক্সিমকো সিনথেটিকসের ৮ কোটি ৬৭ লাখ ১২ হাজার ৩৫৯টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ শেয়ার; যা স্যংখ্যায় দাঁড়ায় ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৩টি। এই শেয়ার ফেসভ্যালু (১০ টাকা) বা অভিহিত মূল্যে কিনে নেবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ ১০ টাকার মূল্যের ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৩টি শেয়ার ৫৫ কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার ২৩০ টাকা দিয়ে কিনবে। এরপর পুঁজিবাজার থেকে বের হয়ে যাবে বেক্সিমকো সিনথেটিকস।

বেক্সিমকো সিনথেটিকসের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএসইসি আমাদের আবেদন অনুমোদন করেছে। এখন আমরা ডিএসই ও সিএসইর সঙ্গে তালিকাচ্যূত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আইন অনুসারে তালিকাচ্যূত হবো।

ড্রন টেক্সচারড ইয়ার্ন (ডিটিওয়াই) নামে এক ধরনের পলিয়েস্টার সুতা উৎপাদন ও বিক্রির জন্য ১৯৯০ সালের ১৮ জুলাই ‘যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর’-এ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয় বেক্সিমকো সিনথেটিকস।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোম্পানির কার্যক্রম ছিল একক পণ্য অর্থাৎ ডিটিওয়াই ঘিরে। তখন যেহেতু ডিটিওয়াইয়ের ব্যাপক চাহিদা ছিল ফলে কোম্পানিটিও ভালো মুনাফা অর্জন করে এবং ১৯৯৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৮ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করেছে। তবে ২০১২ সালের পর থেকে কোম্পানি কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি।

এমআই/এনএফ