ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) ও সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনা হয়েছে। একইসঙ্গে চলতি বছর পরীক্ষার ফল আরও দ্রুত প্রকাশের জন্য ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) ব্যবহারের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা শেষে ঢাকা কলেজ কেন্দ্রে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মাকসুদ বলেন, সাত কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল আরও দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে এই বছর থেকেই খাতায় ওএমআর ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি খাতা দেখার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের ব্যাপারে আমাদের মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে কোন শিক্ষক যদি ফল দিতে কোন কারণে বিলম্ব করেন তবে তাকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এতে করে আমরা লক্ষ্য করেছি সাত কলেজের ফল ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রথম দিকে যে দীর্ঘসূত্রিতা বা বিলম্ব ছিল সেটি এখন একটি নিয়মের মধ্যে চলে এসেছে।

আরও পড়ুন: ‘সুষ্ঠু হয়েছে সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা’

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আবারও পরিবর্তন করা হয়। কেননা আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখা এবং শিক্ষার মান ধরে রাখা। সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে যুক্ত না করায় যে সকল জটিলতা তৈরি হয়েছিল, আমরা প্রত্যাশা করি আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই সেটি সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলো আমরা যেমন গ্রহণ করেছি একই সাথে ন্যায্য নয় এরকম বহু দাবি আমরা গ্রহণ করিনি।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদেরও সচেতন থাকা দরকার। সাত কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্লাসরুম ও শিক্ষকের তুলনায় অনেক বেশি। একটি ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০ এর অধিক থাকার কথা নয়। এবং প্রতি ১০ জনে একজন শিক্ষক হওয়া প্রয়োজন।  কিন্তু সাত কলেজে সেটি নেই। যে কারণে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বাস্তবে আমরা বৈশ্বিক মান থেকে অনেক বিষয়েই পিছিয়ে আছি। সেজন্যেই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ্য নিয়ে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে দিয়েছেন তা যেন নিকট ভবিষ্যতে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।

অধ্যাপক মাকসুদ বলেন, সাত কলেজ পরিচালনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম কানুনের সাথে খাপ খাওয়াতেও বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে নানাবিধ সমস্যার সমাধান আমরা করেছি। বাকি যেসব সমস্যা সামনে আসছে সেগুলোও চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সাত কলেজের শিক্ষকদের পঠনযোগ্যতা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে কিনা- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাত কলেজের জন্য আমরা আলাদা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করব। সাত কলেজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সাত কলেজের কি রিসোর্স রয়েছে, কতজন শিক্ষক রয়েছে, বিজ্ঞানের বিভাগগুলোর জন্য ল্যাবরেটরি আছে কিনা এসব বিষয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছি। এসব ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী মাসে আমরা সাত কলেজের সব অধ্যক্ষদের নিয়ে একটি সভা করব যাতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা যায়। সেখানে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ যেমন থাকবে তেমনি সাত কলেজের একাডেমিক পরিবেশ আরও উন্নত করার বিস্তারিত পরিকল্পনাও থাকবে।

একই সাথে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরএইচটি/এমএ