রাজধানীর মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিনা ছুটিতে বিগত ছয় মাস ধরে তিনি বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় অনুপস্থিত রয়েছেন। মঙ্গলবার তাকে এ প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে বির্তক তৈরি হচ্ছে।

মাউশির সহকারি পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ঢাকা মহানগরীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, ১৬ ফেব্রুয়ারি স্মারকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশনের (নং-১৫২৭২/২০২২; তারিখ: ১৫/১২/২০২২) নির্দেশনার আলোকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। এ বিষয়েও অদ্যাবধি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।  

মামলার পিটিশনারের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ (ইনডেক্স নং- ডি১৬৬০০২) ইতোমধ্যে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। সে মোতাবেক পরবর্তী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক হলেন মো. জাকির হোসেন (ইনডেক্স নং-ডি২৭০৫৭৮)। আদালতের নির্দেশনা আলোকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে৷ 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো. জাকির হোসেন বিগত ছয় মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। সম্প্রতি গভর্নিংবডির সিদ্ধেন্তে দুটি দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে যোগদান করতে বলা হলেও তিনি যোগদান করেনি। সে কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা করে কর্তৃপক্ষ। মাউশি থেকে তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তার ওপরে বর্তমানে দায়িত্বরত ফরহাদ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে তিন বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে গভর্নিংবডি। এটি নিয়ে আদালতে বিচারাধীন থাকার পরও এ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নতুন বির্তক সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন বলেন, বিধি মোতাবেক গভর্নিংবডি আমাকে চুক্তিভিত্তিক তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। আমার নিয়োগ বৈধ। এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় চাকরিচ্যুত একজন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন বলেন, প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করে সেখানে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে গভর্নিংবডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

তবে চাকরিচ্যুত কাউকে প্রধান করা হয়েছে বলে তার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্দেশনায় কোনো ক্রটি বা সংশোধন প্রয়োজন হলে গভর্নিংবডি আমাদের লিখিতভাবে জানালে তা সংশোধন করা হবে। 

এমএম/এনএফ