শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, সাবেক অধ্যক্ষের চাকরির মেয়াদ শেষ, স্বাভাবিকভাবে নতুন কেউ আসবে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামান্য ব্যাপার উচ্চ আদালতে গড়িয়েছে, যা হওয়ার দরকার ছিল না। হাইকোর্টের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে সিনিয়র শিক্ষক জাকির হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছ। তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন। তার অধীনে মনিপুর স্কুল চলবে।

শনিবার (১১ মার্চ) মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কামাল আহমেদ মজুমদার।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন জায়গায় এটি নিয়ে মামলা, হামলা। নিউজে এসেছে এখানে মারামারি হবে। এত নামি একটা প্রতিষ্ঠান নষ্ট হবে— এমনটা আমরা হতে দিতে পারি না। আগে যিনি ছিলেন তার অধীনে শিক্ষকরা যেভাবে দায়িত্বের পালন করেছেন, সেভাবেই আজ যিনি দায়িত্ব পেয়েছেন তার অধীনে কাজ করে যাবেন।

তিনি বলেন, চাকরি থেকে সবাইকে বিদায় নিতে হয়, চলে যেতে হয়, অবসর নিতে হয়, চিরজীবন কেউ থাকে না। আমাদের সাবেক প্রিন্সিপাল অনেক দিন চাকরি করেছেন। ভালো করেছেন, মন্দ করেছেন— এই বিচারের ভার আপনাদের। স্কুল ভালো ফলাফল করছে, এটি প্রিন্সিপালের একক সাফল্য না, এটা সব শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল। এখন নতুন আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমার প্রত্যাশা তার নেতৃত্বে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আমরা অর্জন করব। ৪০ হাজার শিক্ষার্থী, ৮০ হাজার অভিভাবকের স্কুলকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না। ১২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক। হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়ে যাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন তার অধীনে আপনারা কাল থেকেই শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরবেন।

কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, অনেকেই গার্ডিয়ান ফোরাম, এটা সেটা করে অনেক কথা বলে, কারণ তারা এই স্কুলের ইতিহাস জানে না। ছেলেমেয়েরা চায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন ভালো থাকে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এসব অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। এখানে কোনো অর্থ আত্মসাতের ব্যাপার নেই, অভিভাবকদের জিম্মি করে এই অর্থ উঠানোর যে অভিযোগ উঠে এসব ভিত্তিহীন। স্কুলের বেতন-ফিস থেকে যে টাকা আসে তা থেকে আমরা এসব ঋণের কিস্তি দেই। মনিপুর স্কুলে গত পাঁচ বছরে এক টাকাও বেতন বাড়েনি। অনেক সমকক্ষ স্কুলে এর তুলনায় ডাবল বেতন।

তিনি বলেন, স্কুলের কোনো অর্থ অপচয়, আত্মসাৎ হলে খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সার্ভিস চার্জ নেওয়ার যে অভিযোগ তা ভিত্তিহীন, না জেনে অনেক অভিভাবক বলেন। এমন কোনো চার্জ আমরা নিই না। আইডি কার্ড নিয়ে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে যে কর্মকর্তা-কর্মচারী এর সঙ্গে জড়িত সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বলেও যোগ করেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানের ৮৫০ শিক্ষকের মাত্র ৩৯ জন এমপিও পায় উল্লেখ করে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে আহ্বান এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের যেন এমপিওভুক্ত করা হয় অথবা সরকারিকরণ করা হয়। সরকার সরকারিকরণ করলে আমি সাধুবাদ জানাই। সুপারভিশন বডি হচ্ছে ট্রাস্ট, নন এমপিও প্রতিষ্ঠান চলতে তা লাগে, এর কোনো ক্ষমতা নেই। এরা শুধুই লেখাপড়া ভালো হচ্ছে কি না দেখবে। এখন জাকির সাহেব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, তিনি এর সদস্য সচিব হবেন। বাকি ছুটিছাটা, পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন সব সরকারের নিয়ম অনুসারে চলবে।

তিনি বলেন, মনিপুর স্কুলে কোনো গ্রুপিং নাই, সব কিছুর অবসান হয়েছে। কেউ তারপরও গ্রুপিং করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ এক মহল স্কুলের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করছে, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না।

এমএম/এসএসএইচ/